প্রথম দফা লকডাউন শেষের পথে আবার শুরু হতে চলছে নতুন করে লকডাঊন। দফায় দফায় লকডাউনের ফলে দেশের ফুলের রাজ্যখ্যাত যশোরের গদখালির ফুলের বাজার এখন ক্রেতা শূন্য। বেনাপোল বা সাতক্ষীরা ছেড়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা সিলেটের উদ্দেশে ছাড়েনি কোনো পরিবহন।
ফলে অবিক্রিত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে আছে বস্তা বস্তা ফুল। অবিক্রিত অবস্থায় ক্ষেতে পড়ে আছে কয়েক কোটি টাকার ফুল। ফুল তুলে বিক্রি করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা ক্ষেত থেকে টাকা খরচ করে ফুল তুলছে না। গদখালির কৃষকদের বুক জুড়ে শুরু হয়েছে কষ্টের মাতম।
করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে সরকারের দেওয়া সাতদিনের লকডাউনের প্রথম দিনেই চরম ধস নেমেছে ফুলের বাজারে। বিশেষ করে পরিবহন বন্ধ থাকায় ফুল চাষিরা পড়েছেন মহাবিপাকে। পানির চেয়ে কম দর হেঁকেও খদ্দের পাচ্ছে না ফুল চাষিরা।
সোমবার সকালে গদখালির ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বস্তা বস্তা গোলাপ বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে সাথে রজনীগন্ধা ও গ্লাডিওলাসসহ বিভিন্ন জাতের ফুল। ফুল চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে হাহাকার। রিকশা ভ্যানে ফেরি করেও বিক্রি হচ্ছে না কোনো ফুল। নাভারন, বেনাপোল ঝিকরগাছা বাগআঁচড়া বাজারে ফেরি করেও ক্রেতা পাচ্ছে না ফেরিওয়ালা।
দোকানপাট বন্ধ থাকায় বাজারে লোকজনের চাপ কম। ফলে ফুলের ক্রেতা নেই বলে জানালেন ফুল বিক্রেতা হাসান।চাষিরা জানান, ৭ দিনে গোলাপের ক্ষেতের অনেক ফুল শুকিয়ে গেছে। লকডাউন যদি কোনো কারণে বেড়ে যায় তাহলে চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ বছর গ্লাডিওলাস চাষ করা হয়েছে ২৭২ হেক্টর, রজনীগন্ধা ১৬৫ এবং গোলাপ ১০৫ হেক্টর, গাদা ৫৫, জারবেরা ২২ এবং রথস্টিক ফুলের চাষ করা হয়েছে ৫ হেক্টর জমিতে।
২০১৯ সালে গ্লাডিওলাস বিক্রি হয়েছিল ১১ কোটি ৩৪ লাখ, রজনীগন্ধা ৪ কোটি ৯৬ লাখ এবং গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছিল প্রায় ১২ কোটি টাকার। ফুল চাষিরা ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফুল চাষ করেছে। ফুলের ন্যায্য দাম না পেলে ব্যাংক ঋণ মেটাতে জমি বিক্রি ছাড়া পথ থাকবে না। গত ৭ দিন লকডাউনে প্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষিকর্তা জানান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই