বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণায়নের প্রভাবে এবার দিনাজপুরের লিচুর ফলন কম হওয়া এবং করোনায় বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন লিচু চাষী ও বাগানীরা। এ বছর লিচুর মুকুল তুলনামূলক কম। তাই ফলনও কম হয়েছে। লিচুতে রং লেগেছে জৌষ্ঠের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে আসতে পারে লিচু।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি, কাঠালী আর দেশী লিচু এখন গাছে গাছে।
কৃষিবিদ ও উদ্ভিদবিদরা বলছেন, এ অঞ্চলে বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণায়নের প্রভাবে সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে প্লান্ট বায়োলজিক্যাল ক্লক বা উদ্ভিদ জৈব ঘড়ির উপরে প্রভাব বিস্তার করেছে। অসময়ে অতিবৃষ্টি বা সময়ে অনাবৃষ্টির প্রভাব ফেলছে। গত বছরের শরৎ ও হেমন্তে বর্ষার প্রভাবে লিচুগাছের শরীর বৃত্তিয় কার্যক্রমে প্রভাবিত করায় বসন্তে মুকুলের পরিবর্তে বেরিয়েছে নতুন পাতা। অন্যদিকে বসন্ত ও গ্রীষ্মে নূন্যতম বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মুকুল ও গুটির পূর্ণাঙ্গতায় পড়েছে প্রভাব। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত করেছে ফল উৎপাদনে। শীতকালে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম ছিল। এ কারণে গাছে ফুল না ধরে কচি পাতা বের হয়েছে।
একইসঙ্গে লিচু গাছে মাত্রাতিরিক্ত হরমোন ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলেও গাছের উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমশই হ্রাস পাচ্ছে বলেও জানান উদ্ভিদ বিষয়ক গবেষক, লেখক ও দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এমএসসির শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন এমনটাই বললেন।
জানা যায়, দিনাজপুর জেলায় সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। সেখানে গাছ রয়েছে সাত লাখের ওপরে। যা থেকে গত বছরে ৩৫ হাজার মেট্রিক টনের ওপরে লিচুর ফলন হয়েছিল। চলতি বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। প্রতি বছর এই জেলায় সোয়া চারশ’ থেকে সাড়ে চারশ’ কোটি টাকার বেশি লিচু বেচাকেনা হয়।
দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুরের জাকির বলেন, আমার বাগানে গত বছর ১০ লাখ লিচু পেয়েছিলাম। এ বছর সে পরিমান পাবো কিনা সন্দেহ আছে। এ বছর লাভ হওয়ার সুযোগ কম। এ বছর বাজার ভালো হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ