মাস্ক পরিধান ও অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হবার জন্য বেসরকারিভাবে মাইকিং করা হচ্ছে দিনরাত। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানছে না লোকজন। আবার বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে ভারত ফেরত যাত্রীরাও মানছেন না কোয়ারেন্টাইন। হোটেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসারদের ম্যানেজ করে বাজারঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
গত ১৫ দিনে বেনাপোল ও আশপাশের এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে গেছে। ২ জুন পর্যন্ত শার্শা উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৩ জন। এর মধ্য আইসোলেশনে আছেন ৬৯ জন। ভারত ফেরত যাত্রীদের নিয়ে সবচেয়ে বেনাপোল বন্দর এলাকা রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
সবচেয়ে সংক্রমিত এলাকা চেকপোস্ট ও ভারত সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম বড় আঁচড়া, গাজীপুর ও দীঘিরপাড় এলাকা। সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকা সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বিজিবি কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। গত ২০ জুন স্থানীয় একটি হোটেল থেকে বের হয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে আম বুকিং দিতে গেলে কুরিয়ারের ম্যানেজার পাসপোর্ট যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এদিকে গত ১ জুন বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা সাতজন যাত্রীর করোনা পজিটিভ এসেছে। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এর আগে, গত মে মাসে বেনাপোল শহরের আশপাশে ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হবার খবর নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জেলা সিভিল সার্জন শাহীন হোসেন জানান, হোটেলে অবস্থান করা ভারত ফেরত যাত্রীদের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার বিষয়টি ঝুঁকিপুর্ণ। ২ জুন ৪২ জনের শরীর থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের হোটেল থেকে যশোর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের ১৩ দিন পর নেগেটিভ নিশ্চিত করেই ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। যারা ভারত থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসছে তাদেরও বাংলাদেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বৈধ অবৈধভাবে অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে বেনাপোলে আসে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের মেলামেশা ও হোটেলে থাকাটা বেনাপোলবাসীর জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বেনাপোলের মানুষ এখন বেশ শঙ্কিত। আবাসিক হোটেল থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় যাত্রীরা নেমে বাজারে ঘোরাঘুরি ও কেনাকাটা করে হোটেলে প্রবেশ করছে, যা খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। পুলিশ প্রশাসনকে আরও কঠোর না হলে সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ