হাসপাতালের ইনডোরে করোনা আইসোলেশন ইউনিট, নারী ওয়ার্ড, প্রসূতি ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডেই রোগী। বেডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় থেকে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক-স্টাফরা।
অপরদিকে জরুরী বিভাগ, আউট ডোরে, এএনসি, কেএমসি ও পিএনসি সেবা এবং আইএমসিআই কর্নারেও প্রতিদিন সেবা নিচ্ছে ৬-৭শ রোগী।
এ অবস্থা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও জনবল সংকট থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সীমিত জনবল ও বারদ্দ দিয়ে করোনা ঝুঁকি নিয়েই খানসামা উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ, স্বাস্থ্য কর্মীরা।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, মার্চের শুরু থেকে জ্বর-ডায়রিয়া রোগী বাড়লেও এখন প্রতিদিন হাসপাতালের ইনডোরে চিকিৎসাধীন রোগী ৬৫-৭০ জন। নিয়মিত ২৫-৩০জন রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি হচ্ছে এবং ২০-২৫জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। এর অধিকাংশ জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী।
অপরদিকে গত এক সপ্তাহে যমজ বাচ্চাসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের সংখ্যা ১৫জন। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে ঘরে থেকেই যেকোনো চিকিৎসা নিতে জনগণের আগ্রহ বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর ফলে স্বাস্থ্য সেবার মানের দিক বিবেচনায় গত বছর বিভাগের মধ্যে ও কয়েকবার জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয় খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামেই ৫০ শয্যার এখনও প্রশাসনিক কোন অনুমোদন মেলেনি। পূর্বের ৩১ শয্যারও জনবলই সংকট আছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা ৬ জন, নার্স-মিডওয়াইফের সংখ্যা ১৫জন। যেখানে এই হাসপাতালে শূন্য পদের সংখ্যা চিকিৎসক পদে ৯টি, নার্স-মিডওয়াইফ পদে ৫টি, ৩য় শ্রেণির ২০টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণির ৫টি পদ।
শিমুলতলী এলাকার লিটন ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, জ্বর, মাথাব্যথা ও কাশি নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। হাসপাতালে সেবার মান ভালো কিন্তু ডাক্তার কম হওয়ায় সেবা নিতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়, যা ভোগান্তিকর।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, জনবল ও বরাদ্দ সংকটের মধ্যেও করোনা ঝুঁকি নিয়েই এখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের মানসম্মত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো: মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও বরাদ্দ সংকট কমলে এবং ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলে স্বাস্থ্য সেবার মান আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি হবে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগযোগ অব্যাহত আছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন