নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের সাত কিলোমিটার সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তখন আর দুর্ভোগের শেষ থাকে না। অপরদিকে, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ধন্দীর বাজার থেকে পরমেশ্বরদী মাদরাসা পর্যন্ত সড়কটির অবস্থাও বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দের সড়কে পরিণত হয়েছে এটি। কার্পেটিং (পিচ) উঠে গিয়ে বর্তমানে সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছেন উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের সাত কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। অনেক জায়গায় রাস্তার দুইধারের মাটি সরে গিয়ে সড়কগুলো ভেঙে পড়েছে। এতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়।
অপরদিকে, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ধন্দীর বাজার থেকে মুন্সীপুর ,গরিবরদী, বানেশ্বরদী, নোয়াগাঁও, পেকেরচর, বিষনাদীকান্দাপাড়া, লক্ষীবরদী, ভিটিপরমেশ্বরদিসহ লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পকারখানার কর্মরত ও ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বেহাল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের আরটিআইটি প্রকল্পে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দরপত্র আহবানের পর ২০১৯ সালে এই দুইটি সড়কের কাজ পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যাতে ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। পরে তারা তালতলা থেকে নয়াগাঁও ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী পর্যন্ত কাজ শেষ করলেও মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা পর্যন্ত কাজে অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়ক সংস্কারের নামে খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখে।
দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা মহসিন কবির বলেন, এ সড়কটি মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বটতলাবাজার থেকে হোসেনপুর সড়কটি সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে বেহাল দশায় পরিণত হয়। কয়েক বছর আগে সংস্কার করা হলেও বৃষ্টির কারণে কয়েক বছরে সড়ক ভেঙে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।
দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের খালেক বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কটি পুরোপুরি চলাচল অনুপযোগী হয়ে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান বলেন, সড়কের অনেক জায়গায় পিচপাথর উঠে গর্ত হয়ে আছে। এরমধ্যে একটু বৃষ্টি আসলে সব ডুবে যায়। মানুষ শান্তি মতো চলাচল তো দূরের কথা, বাজারঘাটও ঠিকভাবে করতে পারে না।
সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আজজারুল হক বলেন, কার্যাদেশে ২০২২ সালের মধ্যভাগে এ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৭ শতাংশ কাজ শেষ করেছে। কাজের ধীরগতির কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন করে ইজারার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা এলজিইডিকে কয়েকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত