ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভোর থেকে তিস্তার পানি হুহু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার চর অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে চরাঞ্চলগুলোতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার ভাঙনে ৩০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
বুধবার দুপুরে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬টা থেকে থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারাজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ৫২ দশমিক ৪৫, যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা গেছে, তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্না অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে।
রাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন জানান, তিস্তার পানি কয়েক দিন স্বাভাবিক থাকার পর গত রাত থেকে আবারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবারের বাড়িতে পানি ঢুকেছে। পানি যেভাবে উজান থেকে আসছে তাতে দু-এক দিনের মধ্যেই তিস্তায় বন্যা দেখা দেবে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও প্রস্তুত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই