নাটোরে দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এবছর পাট চাষে ঝুঁকেছেন। বাম্পার উৎপাদনও হয়েছে। কিন্তু বাঁধ সেজেছে পাট জাগ দেওয়ার পানির অভাব। আর এই জাগ দেওয়ার জন্য দেওয়া হচ্ছে পুকুর ভাড়া।
যে সব কৃষকদের নিজের জাগ দেওয়ার মতো জায়গা নেই, তাদের জমির পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া দিচ্ছে অনেকে। বিঘাপ্রতি তাদের দিতে হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসূমে ৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষক, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
স্থানীয় পাটচাষিরা বলছেন, উপজেলার চাষিরা জাগ দেওয়ার পানির অভাবে পাট কাটতে পারছেন না। যারা কাটছেন তাদের নিজেদের পুকুর-ডোবায় জাগ দিচ্ছেন। আবার অনেকে পুকুর ভাড়া করেও জাগ দিচ্ছেন। যার ফলে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
দেবনগর গ্রামের বজলু মিয়া জানান, পাট কাটার উপযোগী হওয়ার পরেও জাগ দেওয়ার পানির অভাবে কাটতে পারছিলাম না। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে পুকুর ভাড়া করে পাট জাগ দিয়েছি।
কাঁকফো গ্রামের পুকুর মালিক মনির হোসেন বলেন, আমার পুকুরে আমি মাছ চাষ করি। কিন্তু নিজের পাট জাগ দেওয়ার স্বার্থে পুকুরের মাছগুলো বিক্রয় করে জাগ দিয়েছিলাম। পরে এলাকার কৃষকরা তাদের প্রয়োজনে ২ হাজার টাকা বিঘা হারে পাট জাগ দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ বিঘা জমির পাট জাগ দিয়েছেন কৃষকরা।
পুকুর মালিক মহর আলী বলেন, আমার দুই বিঘার একটি পুকুর লিজ নেওয়া আছে। এবছর পাট চাষিদের জাগ দেওয়ার পানির অভাব থেকে আমি পুকুর থেকে মাছ বিক্রি করে দিয়ে তাদের পাট জাগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি। তারা আমাকে তার বিনিময়ে কিছু টাকা দিচ্ছেন।
বাগাতিপাড়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, এবছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় একজনের পুকুরে টাকার বিনিময়ে জাগ দিয়েছি।
বাগাতীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট থেকে ছাল ছাড়িয়ে পানিতে ইউরিয়া মিশিয়ে ডুবিয়ে রাখার মাধ্যমে পাট প্রস্তুতের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই