নেত্রকোনায় কৃষকরা এবার চলতি কৃষি মৌসুমে সার কিনছেন চড়া মূল্যে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখলেও সঙ্কটের কথা বলে প্রতি বস্তায় দুই থেকে আড়াইশ টাকা বেশি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারে বাড়তি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে এসব সার।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নেত্রকোনা জেলায় এখন রোপা আমান আবাদের ভরা মৌসুম। কৃষকদের চারা রোপনের কাজ একেবারে শেষের দিকে। চলতি মাসে জমিতে শেষ করতে হবে সার দেয়ার কাজ। এবার এক লক্ষ ৩০ হাজার ৭৬০ হেক্টরের মধ্যে ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন রোপন হয়ে গেছে। জেলার ১০ উপজেলায় বিসিআইসি ডিলার রয়েছেন ১১৭ জন, বিএডিসি ডিলার ১৭৮ জন ও খুচরা বিক্রেতা রয়েছে ৭১৪ জন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সারের সঙ্কট দেখিয়ে প্রতি বস্তায় ১০০/২০০/২৫০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। অথচ জেলার পারলা বিএডিসি ও সাতপাই রেলক্রসিং গুদামেও পর্যাপ্ত সার মজুদ রয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারা সঙ্কটের কথা বলে দাম নিচ্ছে চড়া এমন অভিযোগ সদর উপজেলার মৌগাতি, হাটখোলা, মজিহাটি, মাহমুদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকের।সদরের আশরাফ আলী সরকার, আবুল কাশেমসহ অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ, গুদামে রয়েছে বরাদ্দ অনুযায়ী পর্যাপ্ত সার। সরকারও ভর্তুকি দিয়ে সার আনছে। কিন্তু কৃষকের চড়া দামে কেনায় সরকার এবং কৃষকের ক্ষতির মাঝ থেকে লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ডিলাররা বলছেন গুদামের মাল ছাড়ছে না। এদিকে গোদাম থেকে বলছে মালের কোনো কমতি নেই যা আসছে দেয়া হচ্ছে। বাড়তি দামের আমরা কোন সুরাহা পাচ্ছি না।
এদিকে সারের স্থানীয় ইউনিয়ন ডিলার প্রতিনিধি নিখিল চন্দ্র সিংহ বলেন, যে দাম লিখা আছে তাই বিক্রি করছি। আমরা মাত্র ২০ বস্তা পাচ্ছি। দরকার এক থেকে দেড়শ বস্তা। সরকারের দেয়া মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত না থাকার কারণে বাইরে থেকে স্বল্প বাড়িয়ে হয়তো কিনে নেন কৃষকরা।
অন্যদিকে যা আছে তাই দিয়ে দিচ্ছি কম দেই না কাউকে এমনটা জানিয়েছেন, জেলার বিসিআইসি ডিলার সমিতির সভাপতি পিযুষ কান্তি ভৌমিক।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চাহিদার অপ্রতুল রয়েছে সার। তবে মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। কেউ যদি সার রেখে সঙ্কট সৃষ্টি করে তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল