বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয় যমুনা নদী থেকে আবারও অবৈধভাবে বালু তুলছে প্রভাবশালীরা। যমুনা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাতে ও দিনে সমান তালে বালু তুলতে থাকায় নদী পাড়ে ভাঙন দেখা যায়।
উপজেলার শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকার বালু উত্তোলনের ফলে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়তে পারে। গত দুইদিন হলো বালু তুলতে থাকলেও প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
জানা যায়, ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। বার বার নদী ভাঙনের কবলে বিলীন হয়েছে ওই ইউনিয়নের প্রায় ১২টি গ্রাম। ওই সব গ্রামের লোকজন যমুনা নদীর পূর্বপাড়ে, বাঁধের উপরসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে। যমুনায় বিলীন হওয়া গ্রামের মধ্যে বৈশাখী ও রাধানগর গ্রাম অনেক বছর আগেই চরাঞ্চল হয়ে জেগে ওঠে। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন কবলিত মানুষজন বৈশাখী ও রাধা নগর চরে এবং চরাঞ্চলে ফসল ফলিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো।
কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা গত কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের সঙ্গে লুকোচুরির মাধ্যমে রাতের আঁধারে ভাসমান লঞ্চ ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে নদী পথে বিক্রি করে আসছে। ইতিপূর্বে অসংখ্যবার অভিযান পরিচালনা করে লক্ষাধিক টাকা জরিমানাসহ বালু ব্যবসায়ীদের কারাদণ্ডও প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারপরও থেমে থাকেনি বালু উত্তোলন।
শনিবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের পাশেই ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করে জমা করা হচ্ছে। দুইদিন ধরে প্রকাশ্য দিবালোকে ডেজ্রার মেশিনের সাহায্যে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে শহড়াবাড়ি ঘাটে জমা করে সেখান থেকে অবৈধভাবে বিক্রি করছেন।
বৈশাখী চরের বাসিন্দারা জানান, বৈশাখী চরে বসবাস করলেও বালু ব্যবসায়ীরা ফসলি জমিসহ ভিটেমাটিও কেটে নিয়ে গেছে। অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বাঁধ এখন হুমকির মুখে পড়ছে।
বগুড়ার ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, যমুনা নদীতে অসংখ্যবার অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানাও করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত যমুনা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে ১ মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। তবে আবারও যদি যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়, তাহলে খোঁজ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই