ফরিদপুরের নগরকান্দার কোদালিয়া শহীদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম-উল ইসলাম ভাজনকান্দা গ্রামের বাড়ীতে হামলা চালানো হয়েছে। বুধবার রাতে নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিয়ে ৪ থেকে ৫ শতাধিক ব্যক্তি এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম-উল ইসলামের বাড়ী ভাঙচুর করে।
এসময় তারা ঘরের সমস্ত মালামাল তছনছ ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীদের হাতে আহত হয় কমপক্ষে ৩ জন। তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুুতি চলছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাকির হোসেন নিলুর সাথে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়া নিয়ে যুবলীগ নেতা ইমাম-উল ইসলামের সাথে বিরোধ চলছিল। ইমাম-উল ইসলাম নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেন।
এ নিয়ে দুইপক্ষের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বুধবার রাত ৯টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে ইমাম-উল ইসলামের বাড়ীতে হামলা চালায়। হামলার সময় ইমাম-উল ইসলামের কর্মীরা রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় হামলাকারীরা বাড়ীতে প্রবেশ করে ঘরের সমস্ত মালামাল তছনছ ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা এসময় বাড়ীতে থাকা প্রার্থীর স্ত্রী সালেহা আক্তারকে লাঞ্ছিত করে তার গায়ে থাকা সোনার গহনা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
তাছাড়া হামলা করে আহত করা হয় সজিব, ফাহিম, হানিফ নামের তিনজনকে। হামলাকারীরা ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিষপত্র, নগদ টাকা, বেশ কয়েক ভড়ি সোনা লুট করে নিয়ে যায়। ঘরে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে ঘরের বাইরে ফেলে রাখে। কর্মীদের জন্য রান্না করা খাবার ফেলে দেয় হামলাকারীরা।
হামলার বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম-উল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থীর পক্ষের লোকজন তার বাড়ীতে হামলা করে বাড়ীর মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। তারা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে বলে যায়, প্রার্থী থেকে সরে না গেলে তার জীবন শেষ করে দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাকির হোসেন নিলু বলেন, ইমাম-উল ইসলাম নৌকা চেয়েছিল। কিন্তু সে নৌকা না পাওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমাকে ফাঁসানোর জন্য নিজেরা ঘর-বাড়ী ও বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। আমার কোন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলনা।
নগরকান্দা থানার ওসি সেলিম রেজা লিপন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে দুইপক্ষের দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুুতি চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ