আগামী ২৭ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে নির্বাচন হচ্ছে যশোরের শার্শায়। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ। গত ১০ বছর আগে থেকে এমপি ও মেয়র গ্রুপ রাজনীতিতে সমানভাবে সক্রিয় রয়েছে। সম্প্রতি নৌকার মাঝিদের তালিকা প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন ইউনিয়নে শুরু হয়েছে মারামারি আর হুমকি-ধামকি।
নমিনেশন পেপার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা এবং বিছিন্ন সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দু’পক্ষের অর্ধ-শতাধিক কর্মী। এবার শুরু হয়েছে শক্তি প্রদর্শনের মহড়া। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মনোনয়ন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে নির্বাচনের আগেই প্রতিপক্ষ এমপি গ্রুপের সাথে মেয়র গ্রুপের বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
মনোনয়ন প্রাপ্তরা আনন্দ মিছিল বের করলেও শক্ত অবস্থান নিয়ে মাঠ দখলে রেখেছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা। নির্বাচনে নৌকার টিকিট প্রাপ্ত ১০ জনের মধ্যে এবার এমপি ও মেয়রের ভাগে ৫ জন করে পড়েছে। শার্শা সদর, উলাশী, ডিহি, নিজামপুর, পুটখালি আসনে গতবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা কেউ মনোনয়ন পাননি। এই ৫টি আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শার্শা এবং উলশী ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শার্শা আসনের দু’বার নির্বাচিত এমপি গ্রুপ সমর্থিত চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন নৌকা না পাওয়ায় তার ৫ শতাধিক সমর্থক মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা সদরে মহড়া দিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। একই অবস্থা উলাশী, গোগা, বাহাদুরপুর এবং পুটখালি ইউনিয়নে। মনোনয়ন বঞ্চিতরা গোগা বাজার দখলে নিয়ে চেয়ারম্যান সমর্থকদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গোগা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আ. রশিদ পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ায় অপর প্রার্থীর সমর্থকদের হাতে মার খেয়ে আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। এদিকে, নির্বাচনে মাঠ দখল নিতে পুটখালিতে বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিনজন মারাত্মক জখম হয়েছে। মেয়র সমর্থিত আব্দুল গফফার সরদারের সমর্থকরা মার খেয়েছে স্থানীয় খলসি বাজারে। হাত ভেঙে ও মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনজন। এমপি গ্রুপের উলশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নালকে প্রথম দফায় মনোনয়ন দেওয়া হলেও তাকে বাদ দিয়ে মেয়র সমর্থক রফিকুল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে নৌকা। এখানে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মনোনয়ন পেলেও মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী মফিজুর রহমানের সমর্থকরা এগিয়ে আছেন। অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, শার্শার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকা বঞ্চিতদের দখলে নির্বাচনের মাঠ। প্রায় একযুগ ধরে শার্শা থানা আওয়ামী লীগ দুটি ধারায় বিভক্ত। দীর্ঘদিন শার্শার এই দুই নেতা রাষ্ট্রীয় এবং দলীয় কর্মসূচি পৃথক পৃথকভাবে পালন করে থাকেন। দু’জনের মুখ দেখাদেখি হয় না বললেই চলে। আর সেই প্রভাব পড়েছে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই