মিথ্যা মামলা হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিনইল গ্রামের নির্যাতিত নারী খাইরুন নেছা সুমি। রবিবার সকাল ১১টায় জয়পুরহাট প্রেস ক্লাবে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার রান্ডিলা-বাহাদুর গ্রামের জুবায়ের রহমানের সাথে ১৬ লাখ টাকার দেনমোহরে তার বিয়ে হয়। ওই সময় জুবায়ের বেকার অবস্থায় চাকুরির সন্ধান প্রার্থী থাকায় তারা বগুড়াতে একটি সাবলেট ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। ২০১৮ সালে সুমি সন্তান সম্ভবা হলে বেকার থাকার কারণে জুবায়েরের ইচ্ছায় সেই সন্তান তিনি নষ্ট করেন। সন্তান নষ্টের পর সুমি তারা বাবার বাড়ি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিনইল গ্রামে ফিরে আসেন এবং সেই থেকে সেখানেই বসবাস করছেন।
পরে কাস্টম কর্মকর্তার চাকুরি পেলে জুবায়ের সুমিকে ত্যাগ করার জন্য নানা ছলচাতুরি শুরু করেন। কিন্তু ১৬ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য থাকায় কৌশলের আশ্রয় নিয়ে জুবায়ের সুমির সাথে সুসম্পর্ক গড়েন। জুবায়ের তার বাড়িতে ঘর নির্মাণে ঋণ নেয়ার কথা বলে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসেবে সুমিকে গ্যারান্টর করার জন্য বেশকিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষরও নেয়। ঋণ নিতে সুমির কালাই শাখার সোনালী ব্যাংক এ খোলা একাউন্টের চেক বই থেকে স্বাক্ষর করা ৬টি চেক গোপনে চুরি করে জুবায়ের।
যা পরবর্তীতে কৌশল করে জুবায়ের তার ভগ্নিপতি দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে সুমির বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ আমলী আদালতে ১২ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। একইসাথে চুরি করা চেক দিয়ে সুমির একাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকাও তুলে আত্মসাৎ করে জুবায়ের। পরবর্তীতে সুমি মুসলিম পারিবারিক আইন ও মোহরানা আদায় সংক্রান্ত পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন যা আদালতে চলমান রয়েছে। জুবায়ের তার ভগ্নিপতিকে দিয়ে ১২ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার ছাড়াও নিজে সুমির বিরুদ্ধে মামলা করার পর তাদের মামলার নবীর হোসেন নামের এক স্বাক্ষীকে বাদি করে গত অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে সুমিকে এক নম্বর আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ সুমিকে গ্রেপ্তার করলেও আদালত তাকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে সুমি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আরও মিথ্যা মামলা করার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ অবস্থায় নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সুমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে মানবাধিকার সংগঠন সহ রাষ্ট্রীয় সহযোগীতার দাবি জানান। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা আজগর আলী উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ