২২ জানুয়ারি, ২০২২ ২৩:৩৬

১৭ জেলেকে জিম্মি করে একজনকে সমুদ্রে নিক্ষেপ, গ্রেফতার ১৫

কক্সবাজার প্রতিনিধি

১৭ জেলেকে জিম্মি করে একজনকে সমুদ্রে নিক্ষেপ, গ্রেফতার ১৫

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া, চকরিয়া, কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে জলদস্যু কবীর বাহিনীর প্রধান নূরুল কবীর ও সেকেন্ড ইন কমান্ড মামুন ও তাদের ১৩ সহযোগীকে আটক করেছে র‌্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।র্

র‍্যাব জানায়, জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করত চক্রটি। মুক্তিপণ না পেলে জেলেদের হাত-পা বেঁধে মারধর করত তারা। শনিবার ( ২২ জানুয়ারি) চান্দগাঁওর র‍্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে ডাকাত, জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে সুন্দরবন এলাকায় বসবাসকারী জেলেরা স্বস্তিতে সমুদ্রে মৎস্য আহরণ করে আসছিলেন। সম্প্রতি দস্যুদের উৎপাত বেড়ে গেলে নজরদারি বাড়ায় র‌্যাব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-৮ কয়েক দিন আগে পটুয়াখালীর পাথরঘাটা এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৭ জলদস্যুকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আটক জলদস্যুরা জানায়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়ায় জলদস্যুরা অবস্থান করছে।

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি)  চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দস্যু নুরুল আফসার, নূরুল কাদের, হাসান, মো. মামুনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চকরিয়া থানার ডান্ডিবাজার এলাকায় জলদস্যু সর্দার  কবীরের আস্তানা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সর্দার মো. নুরুল কবির (২৯), মো. আব্দুল হামিদ কালা মিয়া (৩০), আবু বক্কর (৩১, মো. ইউসুফ (৪৬), গিয়াস উদ্দিন (৩৭), মো. সফিউল আলম মানিক (৩৬), মো. আব্দুল খালেক (৪৪), মো. রুবেল উদ্দিন (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম জিকু (২৮), মো. সুলতান (৩৬) ও মো. মনজুর আলমকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ওয়ান শুটার গান, ৪টি কার্তুজ, ৫টি ক্রিজ, ১টি ছুরি, ১টি রামদা, ২টি হাসুয়া জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি নোয়াখালীর ১৭ জন জেলে মাছ ধরার জন্য সাগরে গিয়ে জলদস্যু কবির বাহিনীর কবলে পড়েন। নৌকাটিতে ১৭ জন জেলে ছিলেন। কবির বাহিনীর ১৫ দস্যু মাছ ধরার বোটসহ তাদের অপহরণ করে। এরপর জেলেদের জিম্মি করে মারধর ও নির্যাতন চালায় তারা। এসময় বোট মালিকের কাছে জলদস্যুরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে বোটের মালিক জলদস্যুদের ২ লাখ টাকা প্রদান করেন। এছাড়া জেলেদের ২ হাজার পিস ইলিশ মাছও তারা লুট করে নিয়ে যায়।

তিনি জানান, দস্যুদের নির্যাতনে জেলে আনোয়ার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে ডাকাতরা। তাকে এখনও পাওয়া যায়নি। জেলেদের জিম্মি করার তথ্যটি র‌্যাব-৮ জানতে পেরে সম্মিলিতভাবে সমুদ্রে অভিযান পরিচালনা করে। আমাদের অভিযানের কথা জানতে পেরে গত ১৭ জানুয়ারি জলদস্যুরা ১৬ জনকে ছেড়ে দেয়। তারা তীরে আসার পর আনোয়ার নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারি। এরপর আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম তরান্বিত করি। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জলদস্যুদের আটক করা হয়।


বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ   

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর