রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় আজ রবিবার ভোরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন দন্ত চিকিৎসক আহমেদ মাহি বুলবুল। তিনি রাজধানীর মগবাজারে রংপুর ডেন্টাল নামে একটি চেম্বারে চিকিৎসা দিতেন। সেখানে তিনি দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। গরিবের চিকিৎসক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। আহমেদ মাহী বুলবুল শনিবার রাত ১০টার দিকে তার মায়ের কাছে দুই হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন সন্তানদের খাওয়ার জন্য গাভির দুধ কিনতে। কয়েকদিন পরে এসে দুধ নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হয়নি।
বুলবুলের বাড়ি রংপুর নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের ভগিবালাপাড়া এলাকায়। দুইভাই এক বোনের মধ্যে বুলবুল ছিলেন সবার বড়। বাবা আব্দুস সামাদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ডেন্টাল কলেজে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকাতেই প্র্যাকটিস শুরু করেছিলেন বুলবুল। মাঝে মধ্যে রংপুরের বাড়িতে আসতেন। বিয়ে করেছেন দিনাজপুরে। সাত বছর বয়সী মেয়ে এবং দেড় বছর বয়সী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার শেওড়াপাড়ায় থাকতেন ডা. বুলবুল।
বুলবুলের মা বুলবুলি বেগম বলেন, শনিবার রাতে দুই হাজার টাকা পাঠিয়ে দুধ কিনে রাখতে বলেছিল বুলবুল। তার কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়িতে আসার কথা ছিল। বাড়িতে এসে সেই দুধ নিয়ে যেত। তার আগেই মৃত্যুর খবর পেলাম। তিনি সন্তান হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বুলবুলের ছোট ভাই বকুল বলেন, সকালবেলা খবর পাই ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। ভাইয়ের সাথে কারও কোনো বিরোধ ছিল না। তিন দিন আগে আমাকে ফোন করে ভাই বলেছিল, তুই রেডি থাকিস রবিবার অথবা সোমবার নোয়াখালী যাব। আমি ভাইয়ের কথামত আজ ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর এল।
১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল গফফার বলেন, বুলবুল খুব ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছিল। সকালে খবর পেয়ে বুলবুলদের বাড়িতে গিয়েছি। এত ভাল মানুষকে এভাবে হত্যা করা হবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।
রংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বুলবুল খুব ভাল ছাত্র এবং শান্ত স্বভাবের ছিল। এধরণের হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারছি না। তিনি হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা