টাঙ্গাইলের বাসাইলে দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রী তিশা হত্যা ও গণধর্ষণের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল (১৯), আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল (১৭) এবং লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)। পরে সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। ওই শিক্ষার্থী তিশা আক্তার (৯) বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবু ভূইয়ার মেয়ে।
সোমবার পিবিআই পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তিশা আক্তার বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে ভালো নাচ করতো। তার বাড়ির পাশের গোবিন্দ মন্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল ও বিজয় সরকার তার নাচে আকৃষ্ট হয়। বিকৃত যৌন লালসা তাদের মনে পোষণ করে তিশাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্যক্ত করতো। দুই মাস আগে তিশা তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু আসামিরা বখাটে ও প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পা তাদের তেমন কিছু বলেননি। তারা তিশার মায়ের গতিবিদ অনুসরণ করতো। আসামিরা জানতে পারেন তিশাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা তার ছেলে শুভর স্কুল ছুটির পর তাকে এগিয়ে আনতে যায়। গত ২৬ মে সকালে শুভকে নিয়ে তার মা পার্শ্ববর্তী শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে নিয়ে গেলে আসামিরা তিশার ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মার ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তার মা বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। স্থানীয় তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তার বহনকৃত অ্যাম্বুলেন্স গাজীপুর পর্যন্ত গিয়ে নষ্ট হলে তাকে সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে তিশার মৃত্যু হয়। ওইদিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার লাশটি ময়না তদন্ত করা হয়। গত ৪ জুন ময়নাতদন্তের রির্পোটে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। ওইদিনই তিশার বাবা আবু ভুইয়া বাদী হয়ে বাসাইল থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই স্ব-উদ্যোগে তদন্তের জন্য গ্রহণ করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩ জনকে গ্রেফতার করে। আসামিরা পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতে রিমাণ্ডের আবেদন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম