সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর দুর্গাবাটি উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৭০০ চিংড়ি ঘের ও কাঁকড়া খামার ভেসে গেছে। শুধু মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৮ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। এতে কাঁকড়া চাষি ও মৎস্য ঘের মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার শ্যামনগর উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া দুর্গাবাটি উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধটি সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ৫ দিনেও মেরামত করতে পারেনি। ফলে এখনো দিনে দুই বার জোয়ার ভাটার কারণে বুড়িগোয়ালীনির ১৫টি গ্রাম পানির নীচে থৈ থৈ করছে।
চরম দুর্ভোগে রয়েছে উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত অতন্ত ২০ হাজার মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদাররা ভেঙে যাওয়া ২০০ ফুট বাঁধ বাঁশ, খুটি, বল্লি ও বালির বস্তাসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে রিংবাঁধ দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোত ও প্রবাল জোয়ারের কারণে দ্রুত বাঁধটি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাঁধটি পুরোপুরি মেরামত হতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের। বাঁধ মেরামত না হওয়ায় খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের তীব্র স্রোতের পানিতে এখনও ১৫টি গ্রাম নিমজ্জিত রয়েছে। এ ঘটনায় সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চিংড়ি চাষিরা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, শ্যামনগরের উপকূল রক্ষা বাঁধ ভেঙে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে মুহূর্তে পানিতে ভেসে গেছে ছোট-বড় ১ হাজার ৮৩৫ হেক্টর চিংড়ি ও কাঁকড়া খামার। এর মধ্যে পুকুর রয়েছে ১০০টি। পানিতে প্লাবিত হয়ে চিংড়ি, কাঁকড়া, সাদা মাছ, মাছের পোনাসহ আনুষঙ্গিক ৮ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে খুব শিগগির বাঁধটি সংস্কার করা না হলে জোয়ারের পানিতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হলে সে ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমান বৃদ্বি পাবে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্থ্য চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করছে। তালিকা প্রস্তুত সম্পন্ন হলে সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্থ্যদের সহায়তায় প্রণোদনার চেষ্টা করবেন।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পাউবোর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের জানান, বাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বস্তা, রশি, বাঁশ ও পেরেকসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। প্রায় ৬০০ ফুট এলাকায় জুড়ে পাইলিং ও রিংবাঁধের কাজ জোরে সরে চলছে। নদীর জোয়ারের ক্ষীপ্রতা কমে গেলে বাঁধ মেরামত করা সহজ হবে। আশা করছি নদীর পানি কমে গেলে দুই এক দিনের মধ্যে রিংবাঁধ দেওয়া পুরোপুরি সম্ভব হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল