গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রহস্যময় সুষেন সরকার উরফে সুজন হত্যা মামলায় জড়িত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লেবু তালুকদার উরফে প্রদীপ, টিটু চন্দ্র সরকার এবং রাহাজ উদ্দিন উরফে রিয়াজ। পুর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা সুজনকে হত্যা করেছে বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ ও থানায় দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার নোয়াপাড়া এলাকার সুবুদ সরকারের ছেলে সুষেন সরকার উরফে সুজনের সঙ্গে গত ২ বছর আগে একই উপজেলার রামদিঘা এলাকার শীতেশ তালুকদারের মেয়ে সৃষ্টি তালুকদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা চাকরির সন্ধানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পুর্বচান্দরা ছাপড়া মসজিদ এলাকায় আসেন। পরে তারা ওই এলাকার চান মিয়ার বাসার একটি কক্ষে ভাড়া থেকে স্থানীয় গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতে শুরু করেন। গত ১৮ এপ্রিল স্বামী-স্ত্রী দুইজনই কারখানায় ডিউটিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। রাত ১০টার দিকে স্ত্রী বাসায় ফিরলেও স্বামী সুজন বাসায় ফিরেনি। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেগে থাকার পর স্ত্রী ঘরের দরজা খোলা রেখে গুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরের ভেতর গলায় গামছা ও ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় সুজনের লাশ ঝুলতে দেখে। পরে সুজন আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। এ ঘটনায় মৃতের শশুর কালিয়াকৈর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদেন্তর জন্য গাজীপুর শহিদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে সুজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের মামা কৌশিক রঞ্জন দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার ঘটনায় জড়িত লেবু তালুকদার উরফে প্রদীপ, টিটু চন্দ্র সরকার এবং রাহাজ উদ্দিন উরফে রিয়াজকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠায়। আসামিদের মধ্যে লেবু তালুকদার উরফে প্রদীপ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা নিয়ে সুজন ফেরত দিত না এবং বিভিন্ন দোকান থেকে আমার নামে মাল বাকিতে খেয়ে টাকা দিত না। সেজন্য তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে গলা টিপ দিয়ে ধরলে সে মরে যায়। পরে তার লাশ কৌশলে তার ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রাখা হয়।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আকবর আলী খান বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আসামি লেবু তালুকদার উরফে প্রদীপ আদালতে স্বীকারোরিক্ত মুলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিভিন্ন সময় টাকা নিয়ে না দেওয়া এবং দোকানের মাল বাকিতে খেয়ে টাকা না দেওয়া নিয়ে সুজনকে মারধরের করলে সে মারা যায় বলে জানিয়েছে।
বিদি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ