৩ অক্টোবর, ২০২২ ১৯:২০

শহর ছুঁয়ে গেছে বিপজ্জনক তারে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

শহর ছুঁয়ে গেছে বিপজ্জনক তারে

শহর ছুঁয়ে গেছে বিপজ্জনক তারে

এলোপাতাড়ি বিদ্যুৎ লাইন, ইন্টারনেট সার্ভিস, টেলিফোন ও কেবল টিভির লাইনে ছুঁয়ে গেছে মৌলভীবাজার পৌর শহর। অথচ এই শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন পৌর মেয়র। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় এবং ইন্টারনেট সার্ভিস, টেলিফোন ও কেবল টিভির লাইন ব্যবসায়ীদের উদাসিনতায় এমনটি হচ্ছে। সুন্দর শহরটি দিন দিন বিপজ্জনক তারে ছেয়ে গেছে।

শহরবাসী বলছেন, ফুটপাত ও রাস্তা ঘেঁষে বিদ্যুতের খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টে ঝুলে আছে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইটের তার। ওই সব তার থেকে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখনই তার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বেপরোয়া হয়ে উঠবেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন দেখা যায়, পৌর শহরের পশ্চিম বাজার, সিলেট রোড, টিসি মার্কেটের সামনে, শমসেরনগর রোড, সাইফুর রহমান রোড, কোর্ট রোড, বেরিরপাড়, ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসহ শহরের প্রায় প্রতিটি মোড়ের এমন চিত্র। শহরের মূল সড়ক কিংবা গলি পথে ঢুকলেই চোখে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে অপরিকল্পিতভাবে ঝুলছে তার।

সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসিনতা ও যথাযথ আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার কারণে তারের জঞ্জাল দিন দিন বাড়ছে। শহরের সড়কগুলোয় বিপজ্জনক অবস্থায় ঝুলছে বিদ্যুৎ, স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের ডিসলাইন ও ইন্টারনেটের শতশত তার। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটছে মাঝে মধ্যে।

শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তারের জঞ্জালে সড়কের দামি বৈদ্যুতিক ও সড়কবাতির খুঁটির ক্ষতি হচ্ছে। ঝুলতে ঝুলতে অনেক স্থানে তারগুলো মাটি পর্যন্ত স্পর্শ করছে। এসব তারের জঞ্জালে একদিকে শহর সৌন্দর্য হারাচ্ছে। পুরনো তারে ত্রুটি দেখা দিলে সেগুলো না কেটেই নতুন তার লাগিয়ে নেয় সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে তারের জঞ্জাল দিন দিন বেড়েই চলেছে।

শহরবাসী বলছেন, শহরকে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে শহরে বিদ্যুৎ লাইন, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের লাইন মাটির নিচে নেওয়ার কাজটি জরুরি। এই ভূগর্ভস্থ লাইন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি সিস্টেম লস কমিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের উপকার করবে। ঝড়-বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হবে না। একই সাথে শহরের সৌন্দর্যহানিও হবে না।

পৌর শহরের বাসিন্দা শামিম আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে মৌলভীবাজার দেশসেরা। এতে আমরা গর্বিত। কিন্তু যখন দেখি এই শহরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে তারের জঞ্জালের কারণে, তখন আমাদের খারাপ লাগে। তারের জঞ্জাল ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তারের জঞ্জালমুক্ত শহর গড়তে এখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

কুসুমবাগের ব্যবসায়ী খলিল মিয়া বলেন, মাটির নিচে বিদ্যুতের তার নেওয়া হলে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমে যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষায় তার ছিড়ে পড়ার ভয়ও থাকবে না। নান্দনিক শহর গড়ে তুলতে তারের জঞ্জাল সরানো জরুরি।

পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে ক্যাবল ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী নিয়ে দুই দফা বৈঠক করেছি। লাইন অপসারণের জন্য পরে আবার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর