বগুড়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে বিভিন্ন ধরনের ফলের দাম। গত এক সপ্তাহ আগে লাগামহীনভাবে বেড়েছিল দেশি-বিদেশি ফলের দাম। দেশি ফলের দাম বেড়েছিল কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর বিদেশি ফলের দাম কেজিতে বেড়েছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। গত দুই মাসে বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এক দফায় ফলের দাম বেড়েছে। এরপর ডলারের দাম বৃদ্ধির ইস্যুতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ফলের দাম আরেক দফা বেড়েছে। আবার অনেক ব্যবসায়ীরা বলছেন দুর্গাপূজার কারণে এক সপ্তাহ হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। যার কারণে দাম বেড়েছিল। তবে বর্তমান বাজারে ফলের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার বগুড়ার বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিদেশি ফলের মধ্যে সবচেয়ে কম দামি ফল মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজিতে।
বাজারে আপেল বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। চায়না কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে। আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থকে ৪০০টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে ছিল ৪৫০ টাকা কেজি।
আনার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে আনার।
এছাড়াও নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। বিদেশি ফলের দাম বাড়ায় দেশি ফলের দামও বেড়েছিল। বর্তমানে দেশি ফলের মধ্যে পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। পাকা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস।
বগুড়া শহরের স্টেশন রোড এলাকায় খুচরা ফল ব্যবসায়ী শামীম জানান, গত এক সপ্তাহ আগে সব ফলের দাম বাড়তি ছিল। এখন দাম অনেকটা কমতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহ আড়তেই মালের আমদানি ছিল কম। যার কারণে দামও বেশি ছিল। বেশি দামে কিনে হলেও মাল রাখতে হয়, কাস্টমারদের দিতে হয়। দাম বেশি হলে লাভও কমে যায়। কাস্টমাররা বেশি দামে ফল কিনতে চায় না। প্রয়োজনের তাগিদে অনেকে কেনেন। তবে এখন দাম কিছুটা কম হওয়ায় বিক্রি একটু বেড়ে গেছে।
ফল কিনতে আসা মেহেদী হাসান বলেন, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। গত সপ্তাহে ফলের দাম অনেকটা বেশি ছিল। আমার ছেলে আনার খাওয়ার বায়না করেছিল। আধা কেজি আনার কিনেছিলাম ২৩০ টাকায়। আজ ফল কিনতে এসে দেখলাম আগের চেয়ে দাম কমেছে।
বগুড়া ফল ব্যবসায়ীর সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আনাম তুষার জানান, ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ফলের দামও বেড়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় শুধু ফল নয়, সব জিনিসের দাম বেড়েছে গেছে। গত সপ্তাহে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দাম বেশি ছিল। কারণ আড়তেই মালের আমদানি কম ছিল। তবে আজ থেকে বাজারে ফলের দাম কমেছে। আগের চেয়ে আড়তে আমদানিও বেড়েছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল