বরগুনার তালতলীতে সন্ধ্যায় বাগান থেকে প্রেমিক প্রেমিকাকে উদ্ধারের পর প্রেমিকের বাড়িতে পরিবারের কাছে জিম্মায় রাখা হয় প্রেমিকাকে। পরের দিন সকালে লাশ উদ্বার করা হয় সেই প্রেমিকা মারুফা আক্তারের (১৪)। শুক্রবার বেথিপাড়া মারুফার নিজ বাড়ির পুকুর পাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার পরিবারের দাবি নির্যাতন শেষে হত্যা করে লাশ পুকুর পাড়ে রাখা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ছোটবগী ইউনিয়নের বেথিপাড়া এলাকার মৃত্যু হানিফ হাওলাদারের মেয়ে মারুফার সাথে পার্শ্ববর্তী ঠংপাড়া এলাকার সুলতান পহলানের ছেলে হৃদয় পহলানের (২৫) প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার দিকে হৃদয় ও মারুফা ঠাংপাড়া এলাকায় একটি বাগানে ভিতর দেখা করতে যায়। সেখান থেকে স্থানীয়রা তাদের আটক করে। পরে উভয়কে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় হৃদয়ের বাড়িতে চাচা সোনা মিয়া ও বড় ভাই সোলায়মানে জিম্মায় দেয়া হয়।
মারুফার ছোট বোন মারিয়া (১২) সকালে বাড়ির পুকুর পাড়ে ফুল গাছে পানি দেওয়ার জন্য যায়। এসময় বড় বোনকে পুকুর পাড়ে শুয়ে থাকতে দেখে ডাকাডাকি করলে না উঠায় বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনে। পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিক হৃদয়কে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান। কিশোরী প্রেমিকা হত্যা ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর থেকেই জিম্মাদার হৃদয়ের চাচা সোনা মিয়া ও ভাই সোলেমান হোসেনসহ তাদের পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে।
মারুফার ছোট বোন মারিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে বড় আপুর ফোনে কল আসে। তার পরে আমাকে মামার বাড়িতে রেখে আসেন। সকালে পুকুর পাড়ে ফুল গাছে পানি দিতে গেলে আপুর লাশ দেখে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এছাড়া আমি কিছুই জানি না।
মারুফার খালু আয়নাল হোসেন বলেন, প্রেমিক হৃদয়ের বাড়িতে তার চাচা ও ভাইয়ের কাছে মারুফাকে জিম্মা রাখা হয়েছিল। হত্যা করে লাশ পুকুর পাড়ে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এনায়েত পিয়াদা বলেন, বৃহস্পতিবার ঠংপাড়া বাগান থেকে সন্ধ্যায় উভয়কে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে প্রেমিক হৃদয়ের বাড়িতে তার চাচার সোনামিয়া ও বড় ভাই সোলেমানের কাছে মেয়েকে রাতে জিম্মায় দেওয়া হয়। এলাকাবাসী জানায়, হৃদয়ের দুই স্ত্রী রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর একটি সন্তানও রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ঘটনাস্থলে পিবিআই ও সিআইডি টিম এসেছে। তারা তদন্ত করছেন। বিস্তারিত তদন্ত করে বলা যাবে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হৃদয় নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল