বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপি নেতা। জেলা পরিষদ নির্বাচনে শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক উদ্দিন টিউবওয়েল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে শেরপুরে বিএনপি নেতার প্রার্থী হওয়া এবং তাকে বিজয়ী করতে অন্যান্য নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনায় দলের মাঝ বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে শেরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আট নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১২০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৯২ জন, নারী ভোটার রয়েছেন ২৮ জন। তারা সবাই শেরপুর পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার (ইউপি সদস্য) ও সংরক্ষিত নারী সদস্য।
নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পর এই ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মোট তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভুট্টো (হাতি), জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শিল্পী বেগম (তালা) ও উপজেলার সুঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক উদ্দিন (টিউবওয়েল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জানা গেছে, এই নির্বাচনী ওয়ার্ডের সিংহভাগ ভোটারই বিএনপি-জামায়াতপন্থী হওয়ায় সুযোগটি কাজে লাগাতে চান স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এজন্য দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী দিয়েছেন তারা। এমনকি ওই প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি দলীয় সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের ভোট দেওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
সুঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক উদ্দিন জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ডিজিটাল ব্যানার ও পোস্টার-লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নিজেকে বিএনপি নেতা ও দলীয় প্রার্থী দাবি করে রীতিমত নিজ দলের সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। ফলে বিএনপি-জামায়াতপন্থী ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম ও ফেরদৌস আলম নামে বিএনপি সমর্থিত দুই ইউপি সদস্য বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ ছিল না। কিন্তু সদস্য পদে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা প্রার্থী হওয়ায় তাকে ভোট দেওয়ার জন্য দলের অনেক নেতাই বলছেন। পাশাপাশি তার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই দ্বিধার মধ্যে পড়েছেন তারা।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য প্রার্থী সুঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক উদ্দিন বলেন, এটি কোনো দলগত নির্বাচন নয়। যার কারণে এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। এতে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই সম্পূর্ণ ব্যক্তি ইমেজে নির্বাচন করছি। আমার নির্বাচনের মাঠ অনেক ভালো। অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু জানান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সে অনুযায়ী দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দলের পদ-পদবীতে থাকা নেতাদেরও কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে বলা হয়েছে। এরপরও কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, নিজ উদ্যোগেই করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল