ফেনীর পরশুরামে নির্মাণ শ্রমিক মোহাম্মদ ইয়াছিন(৩০) হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এমাম হোসেনকে (৩৩) গ্রামবাসী আটক করে ধৌলাই দিয়ে পুলিশকে সোপর্দ করেছেন।
গত রবিরার রাত দশটার দিকে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে আসে। সোমবার পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন। এমাম হোসেন উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। সে নির্মাণ শ্রমিক ইয়াসিন হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। হত্যা ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিল।
স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, রবিবার রাতে এমাম হোসেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে গোপনে বাড়িতে গেলে খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরবর্তীতে তাকে বেঁধে রেখে পরশুরাম থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্বার করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার এজহার সূত্রে জানাযায়, মির্জানগর ইউনিয়নের মধ্যম রাঙামাটিয়া গ্রামের হাসান আহমেদের ছেলে নির্মাণ শ্রমিক মো. ইয়াছিনকে গত বছরের ১৩ এপ্রিল সেলিম ও এমাম হত্যা করে। পরে তারা লাশ গুম করে ফেলে। ওই সময় ‘হত্যায়’ জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সেলিম (৩৩) ও অটোরিকশা চালক জামালকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
গত বছরের ১৩ এপ্রিল ইয়াসিন নিখোঁজ হলে পরশুরাম থানায় সন্ধান চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন তার বড়ো ভাই হারুন।
“তদন্তের এক পর্যায়ে গত বছরের ৮ মে ইয়াসিনের সহকর্মী মো. সেলিম ও অটোরিকশা চালক আবুল কালামকে মধ্যম রাঙামাটিয়া এলাকা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।”
সেলিমকে জিঙ্গাসাবাদে জানান ইয়াসিনের কাছে একটি কষ্টিপাথর ছিল। ওই কষ্টিপাথর ও রাজ মিস্ত্রির কাজের কর্তৃত্ব নিয়ে ইয়াসিনের সঙ্গে সেলিমের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে সেলিম ইয়াছিনকে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ১৩ এপ্রিল বিকাল এক নারীকে দিয়ে ইয়াসিনকে কৌশলে পরশুরাম থেকে ফেনী শহরের বনানীপাড়ায় একটি বাসায় ডেকে আনেন সেলিম। সেখানে ৫/৬ জন মিলে ইয়াসিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ টুকরা টুকরা করে বস্তায় ভরে ভারত সীমান্ত পিলার নম্বর ২১৫-১২-এস এর ৫০ গজ অভ্যন্তরে রাঙামাটিয়া গ্রামে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে একটি খাদে মাটি চাপা দেন। সেলিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জেলা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, বিজিবি, গোয়েন্দা পুলিশ, পরশুরাম থানা পুলিশ ওই স্থান থেকে ইয়াসিনের বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
ইয়াসিনের ভাই হারুন বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামি করে গত বছরের ১৪ এপ্রিল পরশুরাম মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় সেলিম ছাড়াও এমাম হোসেন, মোশাররফ হোসেন, কুসুম, শাহনাজ ও সিএনজি চালক জামালকে আসামি করা হয়েছে।
পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম জানান নির্মাণ শ্রমিক ইয়াসিন হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি ইমাম হোসেনকে দেড় বছর পর গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন