নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসককে (ডিসি) দিয়ে অভিযোগ তদন্ত করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক স্কুলশিক্ষিকার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মামুন কৌশিক (৩২) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনি জেলার বারহাট্টা উপজেলার দক্ষিণ ডেমুরা গ্রামের মৃত আবুল কাশেম ওরফে বুদু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নাসিমা। এতে মামুন কৌশিকসহ আরো একজনের বিরুদ্ধে ডিসির নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার মোহনগঞ্জ উপজেলার ধীতপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। নাসিমা নিজ উপজেলায় ইসলামী ফাউন্ডেশেন পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। স্বামী সাইফুল ইসলাম বারহাট্টায় একটি কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত থাকায় তারা বারহাট্টার ইসপিঞ্জাপুর এলাকায় বসবাস করেন।
নাসিমা জানান, মোহনগঞ্জ উপজেলার মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী সদস্য রোজিনা আক্তার অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিকের তালিকায় নাসিমার স্বামী সাইফুল ইসলামের নাম দিয়ে দেন। পরে গবাদি পশুর প্রণোদনা পাবে এমন আশ্বাসে সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলের সিম নিয়ে নেন রোজিনা। সে সিমের নগদ হিসাবে কর্মসূচির ৯ হাজার ২০০ টাকা নানা বাহানায় নিজে তুলে নেন। পরে ভুক্তভোগী জানতে পারেন এই টাকা ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিকের মাটি কাটার বিল। খবর নিয়ে নাসিমা আরও জানতে পারেন প্রতিবন্ধী ও চাকরিজীবীদের এই কর্মসূচিতে নাম দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছেন মেম্বার রোজিনা।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনে একটি লিখিত অভিযোগও করেন। এরপর জেলা প্রশাসককে দিয়ে ওই অভিযোগের বিচার পাইয়ে দেওয়া এবং আরও বেশকিছু কাজ করে দেওয়ার কথা বলে মামুন কৌশিক নামে বারহাট্টার যুবক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে ১৮ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামুন কৌশিক বলেন, তিনি কোনো টাকা নেননি। তবে তিনি তিন-চার মাস আগে ডিসির হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে বিষয়টি বলেছিলেন। পরে তিনি অভিযোগ পেলে তদন্ত হবে বলে জানান।
বারহাট্টার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) লতিফুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, অভিযোগটি পেয়েই সাথে সাথে বারহাট্টা ইউএনওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রমাণ পেলে মামলা দায়েরের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই