সাতক্ষীরার দেবহাটায় ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে কালুকে (৪০) গ্রেফতারের পর পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কালুসহ ৯ জনের নাম উলেখ করে আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার এস আই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ ওবায়দুল্যাহ জানান, সম্প্রতি দেবহাটা উপজেলার দেবীশহর এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কাটা রাইফেল, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি রামদা ও লাঠিসহ তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় শরিফুল ইসলাম কালুসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী। এঘটনায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হলে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খলিশাখালিতে ওই অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক কালুর অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের একটি দল খলিশাখালিতে অভিযান চালিয়ে কালু ডাকাতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসছিল। খলিশাখালির গফুর মাস্তানের বাড়ির কাছাকাছি পৌছালেই গফুর মাস্তান ও ইসমাইল মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় এস আই শরিফুল ইসলাম, এস আই শোভন দাশ, এ এস আই আব্দুর রহিম গাজী, কনষ্টেবল ফরহাদ হোসেন ও শাহজান আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ৮ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় কালুসহ ৯ জনের নাম উলেখ করে আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন উপজেল নাংলা গ্রামের কালু গাজীর ছেলে গফুর মাস্তান (৪৬), নোড়ারচকের মৃত আকরাম গাজীর ছেলে মেম্বর ইসমাইল (৪২), তার অপর দুই ভাই মারুফ (৩০) ও মুজাহিদ (২৭), বর্তমানে খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলার আয়ুব আলী গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০), নোড়ারচকের মৃত আছেল উদ্দীনের ছেলে আবুল হোসেন গাজী (৪৭), কালাবাড়িয়ার মৃত আবু জাফরের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৪০) এবং খলিশাখালীর মৃত বাক্কার গাজীর ছেলে মুদি সাইফুল (৪২)। বাবুরাবাদের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে আকরাম (৪৩)।
এঘটনায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হলে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খলিশাখালিতে ওই অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক কালুর অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের একটি দল খলিশাখালিতে অভিযান চালিয়ে কালু ডাকাতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসছিল। খলিশাখালির গফুর মাস্তানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালেই গফুর মাস্তান ও ইসমাইল মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা পুলিশকে মারধর করে আটক কালু ডাকাতকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেন।
পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে উলেখ করে ওসি আরও বলেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মুহুর্মহু গুলি ও বোমা ফাঁটিয়ে খলিশাখালি নামক ১৩শ বিঘা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবরদখলে নেয় ডাকাত এবং সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ওই ঘেরটি অপরাধীদের অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। তারা দিনের বেলায় খলিশাখালিতে আত্মগোপনে থাকে। রাত নামলেই বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে বেড়ায়। এসব সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে ওই জনপদের সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের গ্রেফতার পুলিশে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ