সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সহকারী শিক্ষক ও তার দুই ছেলের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক (৪৬)। স্কুলে অনুষ্ঠিত বিদায় অনুষ্ঠানের মানপত্র আনতে বিলম্ব হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার তালম ইউনিয়নের জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে আহত প্রধান শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক জানান, সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের অবসরজনিত বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। মানপত্রটি প্রস্তুত না থাকায় সেটি সংগ্রহ করতে তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনকে সাথে নিয়ে উপজেলা সদরে যান। পরে সেখানে থেকে মানপত্রটি সংগ্রহ করে দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে পৌঁছান। এসময় বিদায়ী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন মানপত্র নিয়ে আসতে কেন দেড়ি হলো বলেই তাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি মারধর শুরু করেন। এসময় তিনি তার দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা (৩৬) ও মনিরুজ্জামান (৩২) ও তার ভাতিজাকে মারধর করার জন্য নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তারা লোহার রড, লাঠি দিয়ে আমাকে পেটাতে থাকে।
তিনি আরও জানান, মারধরের এক পর্যায়ে আমি গুরুতর আহতাবস্থায় মাটিতে পড়ে যাই। পরে উপস্থিত লোকজন সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তার স্বজনদের কাছ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আমাকে সিরাজগঞ্জর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত শিক্ষক জয়নুল আবেদীনকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন জানান, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পেটানোর সাথে জড়িত শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
প্রধান শিক্ষককে পেটানোর বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন বলেন, আহত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আমার অফিসে এসেছিলেন। তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। আর অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আহত প্রধান শিক্ষক থানায় এসেছিল। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ