নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় নিজ উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ‘নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রম’। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ২২ জনের ঠাঁই হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রমে। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ সরকারি কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ২০১৮ সালের ১৮ জুন এর যাত্রা শুরু হয়। এটি গড়ে উঠে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা সরকার পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান সাজুর প্রচেষ্টায়। হাটি-হাটি পাঁ-পাঁ করে এগিয়ে চলছে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন অসহায় দরিদ্র বাবা-মায়েদের জন্য প্রতিষ্ঠিত জেলার একমাত্র বৃদ্ধাশ্রমটি। ১০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত্ত বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন ২২ জন অসহায় বাবা মা ও প্রতিবন্ধি নারীরাও। এখানে যারা নিবাসী হয়েছেন তারা সবাই অতিদরিদ্র, সহায় সম্বলহীন এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। কেউ খোঁজ রাখেন না তাদের।
দিনাজপুর জেলার গজার হাট মাস্টারপাড়া গ্রামের সুমিত্র কুমার দাস বলেন, আমরা এখানে ভালোই আছি। সেবা যত্ন পাই তিন বেলা খাবার পাই। এখানে ঠাঁই হয়ে অনেক ভালো হয়েছে। আমার ভাই এখানে আমাকে রেখে গেছে আর খবর নেয় না।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার আনোয়ারুল ইসলাম দুলাল বলেন, মেয়ে স্পেনে থাকে, মোবাইলে কল দিলে রিসিভ করে না। আমার বোন এখানে আমাকে রেখে গেছেন। পরিবারের কেউ খবর নেয় না।নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রদ্বীপ শিখা যুব ফাউন্ডেশনের সংগঠক রোকুনুজ্জামান লিখন বলেন, বৃদ্ধাশ্রমে এসেছি অসহায় বৃদ্ধ বাবা মায়েদের এক বেলা খাওয়ানোর জন্য। আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখি। প্রতি সপ্তাহের একদিন করে আমরা খাবারের ব্যবস্থা করি।
নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সাজেদুর রহমান বলেন, ভারতের সঙ্গীত শিল্পি নেচিকতার সেই বিখ্যাত গান ‘বৃদ্ধাশ্রম’ এ অনুপ্রাণীত হয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ার পরিকল্পনা নিই। সমাজের অসহায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বৃদ্ধ বাবা মায়েদের কষ্ট দেখে মূলত এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলি। নিবাসীদের তিনবেলা খাওয়ার জন্য একজন মহিলা নিয়োজিত রয়েছেন। তিনিও অসহায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। রান্নার কাজটি তিনিই করেন স্বেচ্ছায়। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার দাবি জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম