নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর একটি প্রকাশ্যে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সোনাপুর-মাইজদী প্রধান সড়কে অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বুধবার বিকেল ৪টা থেকে পোনে ৫টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলে। নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পরে পোনে ৫টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্ত্তাহীন বিল্লাহ ও সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আশ্বাস দিলে এক সপ্তাহের সময় দিয়ে অবরোধ তুলে নেন ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল আলিম শিক্ষাথীদের সম্মতি প্রকাশ করে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ জানান।
এর আগে একই দিন বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাতী স্কুল সংলগ্ন গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড়ে কচি মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহতরা হলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রার্থী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭)। নিহতের পিতা ফজলে আজিম কচি হাসপাতাল সড়কের জননী হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত নূর নাহারের স্বামী ফজলে আজিম শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যান। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানতে পারেন, তার বাসায় ডাকাত ঢুকেছে। তাৎক্ষণিক তিনি বাসায় এসে স্ত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে জানতে পারেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মেয়েও মারা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জেলা শহরের গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড় এলাকার ফজলে আজিম কচি মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় বাসার মালিকের স্ত্রী নূর নাহার বেগম ও তার মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তীকে দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করে। মালিকের স্ত্রী নূর নাহার বেগম ঘটনাস্থলে মারা যান। তার মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। ওই সময় স্থানীয় এলাকাবাসী একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
সুধারাম মডেল থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। মা-মেয়েকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে নিহতের স্বামীসহ অন্য স্বজনেরা তাৎক্ষণিক পুলিশকে এ হত্যার কোন কারণ জানাতে পারেনি। এ ঘটনায় আলতাফ হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি বলে জানা গেছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, মা-মেয়ের হত্যার মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে সুধারাম থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ