ময়মনসিংহের ফুলপুরে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ/লিংক ও সাইবার গ্রুপের এডমিনদের সাথে মতবিনিময় করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাত ৮টায় ফুলপুর থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় কনফারেন্স রুমে ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুনের আহ্বানে ওই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (ফুলপুর সার্কেল) মো. আতাহারুল ইসলাম তালুকদার। ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী ও সেকেন্ড অফিসার মেহেদী হাসান সুমনের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন ফুলপুর থানার চৌকস অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এডমিনদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোনো পোস্ট দেওয়া যাবে না। এমনকি রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড করা যাবে না। এ ধরনের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করা যাবে না। লাইক ও শেয়ার করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি পরিপন্থী কোনো তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তারা আরও বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা যে কোনো সার্ভিস/পোশাককে হেয় প্রতিপন্ন করে কোনো স্ট্যাটাস দেওয়া যাবে না। জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয় লেখা, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কন্টেন্ট ও ফ্রেন্ড সিলেকশনে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসময় এডমিনদের সতর্ক করে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং সেজন্য প্রচলিত আইন ও বিধি বিধান অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বক্তারা বলেন, ইদানিং আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। অতি আপনজনকে মুহূর্তের মধ্যে তুচ্ছ ও শত্রুতে পরিণত করছি। আবেগতাড়িত হয়ে যাচ্ছি। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আমরা বর্তমান সময়ে একটি ভাল বন্ধু বলে বিবেচনা করি। কারণ এখানে তাৎক্ষণিকভাবে সকলের ভালোমন্দ মতামত, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি দেখতে পারি এবং সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া, পছন্দ, অপছন্দ ও অনুভূতিও ব্যক্ত করতে পারি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কারণে ইদানিং পরিবার ও সমাজে নানা অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য একটি অসতর্কতামূলক মন্তব্যের কারণে মামলা-মোকদ্দমা, জেল-জরিমানা পর্যন্ত হচ্ছে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সতর্কতার সাথে ভেবে-চিন্তে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মিথ্যা তথ্যের মাঝে সত্য বিষয় বুঝা কঠিন হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যে কোনো ঘটনা যাচাই-বাছাই করা প্রত্যেকটি সচেতন মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। সন্দেহ ও গুজবের বিষবাষ্প ছড়ানো চরম বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোন ক্ষতিকারক বিষয় থেকে সবাইকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয় পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ