গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় জুয়েল মোল্লা (২৫) নামে এক পুলিশ সদস্যকে ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় এ মামলার অপর ৩ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অনুশ্রী রায় এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই পুলিশ সদস্য কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামের আজাহার মোল্লার ছেলে। তিনি মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, কাশিয়ানীর জোতকুরা গ্রামের আজাহার মোলার ছেলে জসিম মোল্লা, ছয়জুদ্দিন মোল্লার ছেলে আজাহার মোল্লা ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের শহীদ মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বাদী সাইমা আক্তার সীমার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে চাকরির কথা বলে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। পরে ওই বছরেই পুলিশে চাকরি হওয়ার পর ট্রেইনিংয়ে যাওয়ার আগে শরিহা কাবিনমূলে বাদী সাইমা আক্তার সীমাকে বিয়ে করেন। পরের বছর বাদী ওই পুলিশ সদস্যকে কাবিনের জন্য চাপ দিলে বাদীর কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। বাদী যৌতুক দিতে রাজি না হলে ওই পুলিশ সদস্য শরিহামূলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে। এ ঘটনায় বাদী ২০১৭ সালের ৬ জুলাই গোপালগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০২০ সালে মামলার ভয়ে বাদীকে ঘরে তোলার প্রলোভন দেখিয়ে বাদীর কাছে আবারো দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না হলে বাদীকে ঘরে তুলবে না বলে জানিয়ে দেন ওই পুলিশ সদস্য।
পরে গোপালগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাশিয়ানী থানাকে তদন্ত দায়িত্ব দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত পুলিশ সদস্য জুয়েল মোল্লাকে ১ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন ও তিনজকে খালাস দেন।
মামলার বাদী সাইমা আক্তার সীমা বলেন, আমার সাথে প্রথমে প্রতারণা করে ৩ লাখ টাকা নেয়। পরে আমাকে শরাহমূলে বিয়ে করে। পরে সে অস্বীকার করলে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। পরে আমাকে বাড়িতে নিবে বলে আবার আমার কাছে দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। পরে মামলাটি আদলত আমলে নিয়ে বিচারকার্য শুরু করে। আজ আসামিকে এক বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। আমি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।
বাদীপক্ষের আইনজীবি ফজলুল হক খান খোকন বলেন, ওই পুলিশ সদস্য প্রত্যেক বিষয়ে প্রতারণা করছে। ১ বছর সাজা কম হলেও দৃষ্টান্ত হয়েছে। কারণ সাজা না হলে অন্য আসামিরা এ কাজে উৎসাহিত হবে। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল