অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষের গ্রেফতারসহ ৩ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন চালাচ্ছেন বগুড়া ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সবরকম ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবরেও বগুড়া আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. আমায়ত উল হাছিন ক্যাম্পাসে আসেননি।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল ঘোষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন, হলে সিট বাণিজ্য, অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে আইএইচটি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে সাতমাথা-বনানী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিল আরিফুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আইএচটি শিক্ষার্থী নন। অধ্যক্ষ আমায়াত উল হাছিনের মদদে তিনি আইএচটি ছাত্রাবাসের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। সেখান থেকে পুরো ক্যাম্পাসে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন সজল। আগস্ট মাসে ছাত্রবাসের ১৫০ জনের কাছ থেকে মিল (খাবার) বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা উঠানো হয়। সজল ঘোষ পুরো টাকায় নিজের কাছে রেখে দেন।মঙ্গলবার দুপুরে এ মাসের ছাত্রাবাসের ব্যবস্থাপক ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল রহমান খাবারের জন্য মিলের টাকা চাইতে গেলে সজল ঘোষ তাকে মারধর করেন। এরপরেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্র ও ছাত্রী হোস্টেল থেকে বেরিয়ে সড়কে নেমে আসেন।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, ছাত্রাবাসে আলাদা আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের খাবার বণ্টনের জন্য একজন ব্যবস্থাপক নির্ধারণ করা হয়। এ মাসে আমি ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছি। ছাত্রবাসে ১৫০ জন শিক্ষার্থীর থেকে জন প্রতি ২১০০ টাকা করে প্রায় আড়াই লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরপুরো টাকায় সজল তার কাছে জোরপূর্বক রেখে দেন। এখন পর্যন্ত এই মাসে ছাত্রদের খাবার মিল বাবদ মাত্র ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আজ বাকি টাকা চাইতে গেলে তিনি আমাকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর শুরু করেন।
আন্দোলনরত ফাহিম হাসান নামে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, সজল রাজনৈতিক ছত্রছায়াতে এমন কোন অপকর্ম নাই যা করেননি। আমরা তার গ্রেফতার ও অধ্যক্ষর অপসারণ দাবি করছি।
বগুড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি তালিকা করা হয়েছে। দুপুরের পর বগুড়া জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বগুড়া স্বাধীনতা পরিষদ চিকিৎসক ফোরামের সভাপতি ডা. সামির মিশুসহ প্রমুখ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনায় বসবেন।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের এসআই আব্দুর রহিম বলেন, নানা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। পুলিশ তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। ইতিমধ্যে তাদের প্রতিনিধি দল নির্ধারণ করা হয়েছে। সবরকম দাবি নিয়ে আলোচনা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল