৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:০৮

হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় মো. সোহেল (৩৫) নামে এক আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় নিহতের লাশ গুম করার ঘটনায় আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে আরো ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় একই মামলার অপর আসামি রিতা আক্তার ববিতার বিরুদ্ধে ঘটনার বিষয় প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।

রবিবার বেলা ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন বলে নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতে বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মোহাম্মদ হোসেন। আসামি সোহেল লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরপাতা গ্রামের মৃত আয়াতুল্লাহর ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদীর ছোট বোন নিহত পলি আক্তার রিতা বিয়ের পূর্ব হতে এলোমেলো চলাফেরা করিত এবং মেসে থেকে ইচ্ছামত মোবাইলে কথাবার্তা বলাসহ ঘোরাফেরা করিত। বিয়ের পরেও সে ফোনে বিভিন্ন মানুষের সাথে আপত্তিজনক ভাবে কথাবার্তা বলতো। যার কারণে পলি আক্তারের খোঁজখবর তেমন রাখতো না স্বজনরা। পলি আক্তার ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ তার নিজ ভারাটিয়া বাড়ি ঢাকা হতে বাহির হয়ে আর বাড়িতে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি করে নিহতের স্বজনরা। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ২২ মার্চ বাদীর ভগ্নিপতি নিহতের স্বামী মহিম হোসেন জাহিদ লোকমুখে জানতে পারে মুন্সীগঞ্জ জেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মো. মনির হোসেন (৫৩) এর বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে ব্রিজের নিচে খালে কচুরীপানার মধ্যে অজ্ঞাত মহিলার বিচ্ছিন্ন মস্তক পরে রয়েছে। নিহতের স্বামী উক্ত স্থানে উপস্থিত হয়ে তাহার স্ত্রী পলি আক্তার রিতাকে চিনতে পারে। সংবাদ পেয়ে মুন্সীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পলি আক্তার রিতার দেহ বিচ্ছিন্ন মাথার ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার নিহত পলি আক্তার রিতার (৩০) ভাই মোঃ মনির হোসেন এজাজ বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। নিহত পলি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার উত্তর সুতালড়ি গ্রামের মৃত শাহজাহান হাওলাদার মেয়ে।

এ ঘটনায় পুলিশ মামলা তদন্তে সন্দেহের ভিত্তিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল ও অপর এক নারী রিতা আক্তার ববিতাকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে তারা আদালতে দোষ স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ব্যপারে সরকারপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন জানান, নির্মমভাবে ভিকটিম পলি আক্তার রিতাকে হত্যা করে লাশ বিচ্ছিন্ন ভাবে গুম করার চেষ্টা করেছে। তাছাড়া আসামিরা খুনের বিষয় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত আসামী মো. সোহেলকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। এ সময় লাশ গুম করার অপরাধে  ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। আসামি রিতা আক্তার ববিতার বিরুদ্ধে ঘটনার বিষয় প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এএ 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর