বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ রাশিদা বেগম হত্যা মামলার রায়ে নিহতের দ্বিতীয় স্বামী তামিম শেখ ও তার সহযোগী রুবেল খা ওরফে রুবেল দড়িয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনদায়ে আরও একমাসের দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামি জুলহাস শেখকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা মঙ্গলবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা গোপালগঞ্জের বেদগ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত রাশিদা বেগম আগৈলঝাড়া উপজেলার নগরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে একটি একটি বিয়ে এবং প্রথম স্বামীর দাম্পত্যে ২টি সন্তান রয়েছে। প্রথম স্বামী মোকাদ্দেসের সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের ৩ বছর পর তামিমকে বিয়ে করে সে। দ্বিতীয় ঘরে তাদের একটি সন্তান হয়। আগের দুজইন এবং পরের ঘরের এক জনসহ ৩ সন্তান নিয়ে রাশিদা আগৈলঝাড়ার বাকাল ১ নম্বর ব্রিজ এলাকার একটি বাসায় ভাড়া বসবাস করতেন। তামিম শেখের আরেক স্ত্রী গোপালগঞ্জে বসবাস করতেন। মাঝে মধ্যে বাকালে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে যাতায়াত ছিলো তার।
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০২২ সালো ১৯ জানুয়ারি ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রাশিদাকে গোপালগঞ্জে নিয়ে যায় তামিম। ওইদিন রাতে একটি মাহেন্দ্র আলফা যোগে গোপালগঞ্জ থেকে আগৈলঝাড়া বাইপাস মোড়ে নিয়ে রাশিদাকে এলাপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা ১০ মাস বয়সের সন্তান তনিমকে অদূরে ফেলে রেখে যায় তামিম ও তার সহযোগিরা।নবজাতক শিশুর কান্নার সূত্র ধরে এলাকাবাসী ওই রাতেই রাশিদার লাশ আবিষ্কার করে এবং পুলিশে খবর দেয়। নিহতের ছোট ভাই আল আমিন শাহ তার বোনের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি নিহতের ভাই আল আমিন শাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মাজাহারুল ইসলাম ওই বছরের ৩১ জুলাই ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার ৩ আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক উপরোক্ত দণ্ডাদেশ দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওবাদুল্লাহ সাজু বলেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রায়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ কমবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
এদিকে এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের সংক্ষুব্ধ গোলাম মর্তুজা তপু। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএ