শিরোনাম
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৯:২৮

ধরলা নদীতে নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের ঢল

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম:

ধরলা নদীতে নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের ঢল

কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ধরলা নদীর তীরে দীর্ঘ ২৪ বছর পর গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলাকে ঘিরে জন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে ধরলার দুই তীর। নৌকা খেলাকে ঘিরে বসেছে হরেক রকমের স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান। আর এ খেলা দেখতে বহু দর্শকের সমাগম ঘটেছে। 

দূর দূরান্ত থেকে শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সীরা নৌকা বাইচ দেখতে করেছেন প্রন্ড ভিড়। এ ভিড়ে ধরলার দুই তীর হয়ে উঠে জনসমুদ্র। শুক্রবার বিকেলে ধরলা নদীর সেতুপাড় এলাকায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ  প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারির ঝাড় এলাকার ৭১ এর সৈনিক নৌকা বাইচের দল এবং ২য় স্থান অধিকার করে সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার উড়ালচন্ডী নামের নৌকা বাইচ দল। এজন্য প্রথম পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় একটি মহিষ ও দ্বিতীয় পুরস্কার একটি গরু ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি ফ্রিজ প্রদান করে নৌকা বাইচ আয়োজক কমিটি। 

ঐতিহ্যবাহী এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় জেলার ৮ উপজেলার ছোট বড় মিলে ২২ টি নৌকা অংশ গ্রহণ করে।এ নৌকা বাইচ গত ১১ দিনব্যাপি চলছিল। শুক্রবার বিকেলে এ খেলায় জেলা ও জেলার বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন নৌকা বাইচ  দল অংশ নেন।এর মধ্যে সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের সাত ভাই এন্টারপ্রাইজ ও ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, উড়াল চন্ডী,ফুলবাড়ি উপজেলার বাংলা বাজার এন্টারপ্রাইজ, দশ বন্ধু, মামা ভাগ্নে, হলোখানা ইউনিয়নের দশের দোয়া ও একতা,গাজী সৈনিক, রৌমারী ও জামালপুর,ও গাইবান্দার তুফান তরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৭১ এর সৈনিকসহ আরো অনেক নৌকাবাইচের দল। ১১দিন পর শুক্রবার ফাইনাল খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এসময় প্রতিযোগিতায় উত্তরবঙ্গ যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কুড়িগ্রামের আইনজীবী এসএম আব্রাহাম লিংকন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রাজু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। কয়েকদিনের অপেক্ষার পর দূর থেকে ফাইনাল খেলা দেখতে আসা জনৈক নুর ইসলাম বলেন, প্রায় দুই যুগ ধরে এ খেলা চোখে পড়েনা। ধরলা নদীতে নৌকা খেলা দেখতে এসে খুব ভালো লাগল।মন খুলে উপভোগ করলাম। এত লোক সমাগম হবে তা ভাবার মত নয়। অপর এক দর্শক উলিপুর থেকে আসা মহব্বত হোসেন জানান,আমরা খেলা উপভোগ করেছি।খুব আনন্দ পেয়েছি। আমি চাই এরকম খেলা নদীতে প্রতিবছর যেন চালু থাকে। গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক তা আমরা চাই। চর কদমতলা গ্রামের মোহসিনা বেগম বলেন,আমার পরিবারের সবাই মিলে নৌকা ভাড়া করে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি।খুব আনন্দময় দিন কাটলো। 
খেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. ভজু মিয়া বলেন, গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছরের ন্যয় এবারও স্থানীয় লোকজন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এ খেলা ১১ দিন ধরে দর্শক সমাগম হয়। প্রতিবছর এ খেলা চালু থাকবে বলে জানান এ আয়োজক কমিটির প্রধান।

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর