কুড়িগ্রামে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবকটি নদ-নদীর পানি কমে এখন সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত কমে এখন বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি কমার সাথে সাথে কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। সবচেয়ে বেশি তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের বেশ কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে এসব এলাকার নদী তীরবর্তী মানুষজন রয়েছেন ভাঙন আতংকে।
জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে নদীর তীব্র ভাঙনে ১০টি বসতভিটাসহ শতাধিক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভূমি অফিসসহ বসতি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সদর উপজেলা ও উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের খুদিরকুটি ব্যাপারিপাড়া ও মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর সিতাইঝাড় গ্রামে ধরলা নদীর ভাঙনে গত কয়েকদিনে শত শত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।সিতাই ঝাড় গ্রামের ভিটেমাটি হারা জোবেদ আলী বলেন, গত রাতে আমার বাড়িঘর নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে। হঠাৎ ভাঙন শুরু হওয়ায় আমরা এখন দিশেহারা। নিজের জমি-জমা না থাকায় কোথায় ঠাঁই নেব জানি না। অস্থায়ীভাবে আত্মীয়ের বাড়িতে আছি।
ভাঙনের শিকার আরেক দিনমজুর সামেদ আলী বলেন, 'চারটা ঘরের চাল সরে নিয়া স্কুল মাঠত থুচি। ভিটার অর্ধেক গেইছে। নদীভাঙনে কপাল শেষ।'
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়ন, উলিপুরের বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার মোগলাবাসা ধরলার বাম তীরে প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশ জুড়ে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতো বড় অংশে জরুরী প্রতিরক্ষা কাজ করার বরাদ্দ নেই। আমরা তাৎক্ষণিক ২-৩ হাজার জিও ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি। স্কুল,কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনাগুলো রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল