বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পটুয়াখালী জেলার আমন ধানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টিতে রোপা-আমনের ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালী কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার ৮ উপজেলার প্রায় অনেক জমির রোপণকৃত আমন ও ইরি ফসল বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। জমিতে হেলে পড়েছে বাড়তে থাকা ফসল। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় শীতের আগাম সবজিও ক্ষতির মুখে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সুখী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২০৭ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।কৃষকরা জানান, মাঠে এখন আমন ধান রয়েছে, এই সময়ে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে রোপা ধান পানিতে হেলে পড়েছে। আর এতে করে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। কারণ অতি বৃষ্টিতে ফসলি মাঠে পানি জমে গেছে।
কালিকাপুর ইউনিয়নের শারিকখালী গ্রামের কৃষক মোতালেব মিয়া জানান, এখন আমন ধানের মৌসুম ধানে ফুল এসেছে। এই সময়ে অতিবৃষ্টি ও বাতাসের কারণে ধানে চিটা ধরে যাবে তাহলে আমাদের ধান যখন ঘরে তোলা হবে তখন ধানের বদলে চিটা বেশি পাওয়া যাবে। বেশি বাতাসে হেলে পড়ে গিয়ে ধান পানিতে ডুবে থাকলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে আমনে।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় ধানসহ কৃষির বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখনও হাতে পাইনি। তবে পটুয়াখালীতে এখন মাঠে ১ লক্ষ ৯১ হাজার ১১৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান আছে, তার মধ্যে ৫ ভাগ ধান পেকেছে, যেটা কৃষক কর্তন করতেছে, ২০ ভাগ দান আধা পাকা অবস্থায় আছে, এছাড়া ৭৫ ভাগ ধানে ফুল আসা অবস্থায় আছে, ঝড় হাওয়ায় ফুলে চিটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকরা উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফুল অবস্থায় ধান এখন কাটাও যাবে না। তবে যাদের ধান পেকেছে তারা যতোটুকু পারেন, ধান কেটে ঘরে উঠাতে পারেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলার বোতলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনের কাচা ঘর বাতাসে মাটির উপর পড়ে গেছে। এছাড়া গাছপালা এবং কিছু কাচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে জানা যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম