১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৫:৫৯

চাঁদপুরে আলুর কাঙ্খিত ফলন নিয়ে কৃষকরা শঙ্কায়

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর

চাঁদপুরে আলুর কাঙ্খিত ফলন নিয়ে কৃষকরা শঙ্কায়

চাঁদপুর জেলা পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদী বেষ্টিত হওয়ায় আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে অন্যতম। এরধ্যে প্রতিবছর  কৃষকদের একটি বড় অংশই আলুর আবাদ করে থাকে। তবে এ বছর আবাদকালে বৃষ্টির ফলে আলুর চারা রোপণের নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় কাঙ্খিত ফলন নিয়ে কৃষকরা শঙ্কায় রয়েছে। সেইসাথে কয়েক সপ্তাহ ঘন কুয়াশার কারণে জমিতে ছত্রাক রোগ ও হটাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে আলুর ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আলু উৎপাদনে চাঁদপুর শীর্ষ কয়েকটি জেলার মধ্যে অন্যতম। এই জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭হাজার ৫০০ হেক্টর থাকলেও, প্রকৃতিক বিভিন্ন কারণে আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১১০ হেক্টরে। 
এ বছর চাঁদপুর জেলায় আলুর আবাদ হয়েছে, মতলব দক্ষিণে ২,১৭৫ হেক্টর,  কচুয়ায় ১,৯২০ হেক্টর, সদরে ১,৬০০ হেক্টর, মতলব উত্তরে ৬২৫ হেক্টর, হাজীগঞ্জে ৬০০ হেক্টর,  হাইমচরে ১৬০ হেক্টর, ফরিদগঞ্জে ৯০ হেক্টর ও শাহারাস্তী উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে। যা  লক্ষ্যমাত্রার চাইতে আলুর আবাদ ৩৯০ হেক্টর জমিতে কম হয়েছে।

সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের  কৃষক হানু মুন্সী জানান, এই বছর ৩০ শতাংশ জমিতে আলুর আবাদ করেছি। প্রথম এক দফা বৃষ্টিতে চারা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে দেরিতে হলেও আবার আলুর চারা রোপণ করেছি। আবার ঘন কুয়াশার কারণে এখন আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দিয়েছে। গাছের পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে আলু গাছ নুয়ে পড়ছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন সুফল পাইনি। এবার আলুর দাম বেশি হওয়ার কারণে নিজ গাছতলায় আলু আবাদি কৃষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সার, বীজ ও কীটনাশক খরচ দিয়ে ভাল দাম পাওয়া না গেলে লোকসানের মুখে পড়বেন।  

আশিকাটি ইউনিয়নের কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, এ বছর ৪০ শতক জমিতে আলু রোপন করেছে। ঘন কুয়াশার কারণে আলুর গাছগুলো বৃদ্ধি কম হওয়ায়, ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। আবার দেরিতে আলু উত্তোলন হলে দাম কম পাওয়া যাবে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী  বলেন, দুটি ঘূর্ণিঝড় ও অতি বৃষ্টির কারণে সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে আলু রোপণ করতে পারেনি। এতে করে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া কিছুদিন ঘন কুয়াশা ও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে আলুর কাঙ্খিত ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি, গাছ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই মাঠকর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদেরকে ব্যাপক পরামর্শের পাশাপাশি ছত্রাক নাশক স্প্রে করার জন্য বলছেন। এরপরেও আমরা আকাঙ্খিত ফলনের আশা করছি। বিগত বছর হেক্টর প্রতি ২৪ মেট্টিক টন আলুর উৎপাদিত হয়েছিল। এ বছরও নতুন নতুন জাত সম্প্রসারণের ফলে বিগত বছরের তুলনায় হেক্টর প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি। এমনকি নিজে বিভিন্ন এলাকার জমিতে গিয়ে রোগ-বালাই প্রত্যক্ষ করে পরামর্শ দিচ্ছি।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর