বগুড়ার শাজাহানপুরে থানায় ঢুকে পুলিশকে মারপিট করে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টায় মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামানসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে থানা ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রবিবার সকালে থানার এসআই আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার আগে ও পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২টি পিস্তল, ৭ রাউন্ড গুলি, ২টি বার্মিজ চাকু, ২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ ৩৬টি মোটরসাইকেল জব্দ করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় এসআইসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত শনিবার রাত ৯ টায় আড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২টি বার্মিজ চাকুসহ একাধিক মামলার আসামি আড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুনকে আটক করে।
মিঠুনকে আটকের পর রাত ১০টার দিকে মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একাধিক মামলার আসামি নুরুজ্জামানসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন শাজাহানপুর থানায় ঢুকে পুলিশ সদস্যদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় এবং মিঠুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সংবাদ পেয়ে টহল ডিউটিতে থাকা শাজাহানপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম সাথে সাথে থানায় ফিরেন। এসময় নুরুজ্জামানসহ তার অনুসারীরা থানা ভবনের সিঁড়িতে বসে পড়ে। এমতাবস্থায় ওসি তাদেরকে সরে দাঁড়াতে বললে তারা ওসিকে ধাক্কা দেয় এবং পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
তাদের হামলায় এসআইসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠলে নুরুজ্জামান ও তার অনুসারীরা থানা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর আবারো নুরুজ্জামান ও তার অনুসারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ চালাতে উপজেলার বান্নিঘাটা এলাকায় নুরুজ্জামানের মাটির বাড়ির কাছে অবস্থান নেয়। এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ অভিযানে নামে। অভিযানে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, ওহাবুজ্জামান নাঈম, নাজমুল, বোরহানসহ ৯ জনকে আটক করে। এসময় ২টি পিস্তল, ৭ রাউন্ড গুলি, ২টি বার্মিজ চাকু, ২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ ৩৬টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
শাজাহানপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, সন্ত্রসী কায়দায় থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে আসামি ছিনতাই চেষ্টায় মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
উল্লেখ্য, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে জমি দখল, সরকারি কাজে বাঁধা, মাদক আইনে অন্তত ৮ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে। এর আগে সরকারি টেন্ডার চুরির ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বরখাস্ত হয়েছিলেন। তিনি শাজাহানপুরে সন্ত্রাস ও আধিপত্য বিস্তারে সরকারি দলের পদ-পদবী ব্যবহার করেন। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস পায় না নেতৃবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল