বগুড়ার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। কমতে শুরু করেছে পণ্যের দাম। তাদের এমন উদ্যোগে খুশি সাধারণ মানুষ। ক্রেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা যদি ঘন ঘন বাজার মনিটরিং করে তাহলে পণ্যের দাম কমে আসবে। যারা বিভিন্ন অজুহাতে সিন্ডিকেট করছেন তারা বাজারে অস্থিতিশলী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে শহর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, বৃক্ষরোপন, ট্রাফিক না থাকায় যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন, দেয়ালে আলপনাসহ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন। এবার তারা বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করছেন। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা বাজার মনিটরিং শুরু করেন। এদিন শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রাজাবাজারে সবজিসহ নিত্য পণ্যের সব দোকানগুলোতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিটি দোকানে দোকানে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন নিত্য পণ্যের দাম শুনে তা নিজেদের খাতায় লিখে নেন। এ সময় তারা দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদেরকে কাউকে চাঁদা না দেওয়ার অনুরোধ জানান। বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার ২০ থেকে ২৫জন শিক্ষার্থী বাজারে আসেন। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এটা কিভাবে কমানো যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা জানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি একটি বড় কারণ। আমরা সেটা বন্ধ করতে চাই।
শিক্ষার্থীদের মনিটরিংয়ের ফলে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। বগুড়ার সবজির বড় আড়ৎ মহাস্থান হাটে এক দিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম ৫ থেকে ৭টাকা কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির উৎপাদন ভাল হয়েছে। অতি বৃষ্টি বা বন্যায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যদি সব স্থানে চাঁদাবাজী বন্ধ হয় এবং সিন্ডিকেট ভাঙ্গা যায় তাহলে পণ্যের দাম আরও কমবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বাজার মনিটরিংয়ে সাধারণ মানুষ খুশি হয়েছেন। তারা বলছেন, সব চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট বন্ধ হলে আমরা ন্যায্য মূল্যে কেনা-কাটা করতে পারব। বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। মানুষ শান্তিতে বাজার করতে পারবে।
শুক্রবার বগুড়া রাজাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁচা মরিচসহ সব সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। ২০০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দামও প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা কমেছে। এছাড়া অন্যান্যের সবজির দাম কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা কমেছে।
বগুড়া ফতেহ আলী বাজারে সবজি কিনতে আসা মোস্তাফিজার রহমান জানান, বিগত সময়ে দ্রব্যমূল্য ছিল অন্যতম একটি সমস্যা। চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের কারণে পণ্যের দাম দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। সেটা আমাদের শিক্ষার্থীরা মনে রেখেছেন এবং বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছেন। এটা অবশ্যই ভাল দিক। নতুন সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
বিডি প্রতিদিন/এএম