৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৮:৪৪

চাঁদপুরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর:

চাঁদপুরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ভরা মৌসুম হলেও জেলেদের জালে ধরা পরছে না কাঙ্খিত ইলিশ। জেলেরা দিন-রাত নদীতে জাল ফেলে মাছ না পেয়ে হতাশ। জেলেরা যে পরিমাণ ইলিশ পাচ্ছে, তাতে লাভ দূরে থাক, নৌকার জালানী খরচই উঠে আসছে না। গত মার্চ-এপ্রিল দু’মাস জাটকা রক্ষা অভিযান শেষে মহাজনের দেনা কাঁধে নিয়ে জেলেরা নদীতে নামে। ভরা মৌসুম শুরু হলেও জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্খিত ইলিশ। এতে জেলার অর্ধ-লক্ষাধিক জেলে আর্থিক সংকটে পড়েছে। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, শীঘ্রই জেলের জালে ইলিশ ধরা পড়বে। 

সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বড় স্টেশন মৎস্য অবতরন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, হাঁক-ডাক দিয়ে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। 

জেলে মালেক গাজী ও সলেমান দেওয়ান বলেন, বুক ভরা আশা নিয়ে নদীতে নেমেছি কিন্তু মাছ না পেয়ে হতাশা হয়ে ফিরছি। ভরা মৌসুম শুরু হলেও চাঁদপুরের নদীগুলো ইলিশ শূন্য। পদ্মা-মেঘনায় দিন-রাত জাল ফেলেও আমরা কাঙ্খিত ইলিশের নাগাল পাচ্ছি না। অধিকাংশ সময়ই একপ্রকার শূন্য হাতে জাল-নৌকা নিয়ে বাড়ী ফিরে আসতে হয়। জালে যে পরিমান ইলিশ ধরা পরছে, তাতে নৌকার তেলের খরচ উঠে আসছে না। 

ক্রেতা মাইনুল ইসলাম ও ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ভরা মৌসুমে ইলিশের সংকট ও দাম অসহনীয় থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেন। বাজারে এসে দেখছি ইলিশের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশী। তাই মাছ না কিনেই বাড়ী ফিরছি, দাম যখন কমবে তখন কিনবো। এখন ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১২০০ টাকা টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুর ইলিশের বাড়ী হলেও আমরা  ইলিশের স্বাদ নিতে পারছি না। 

আড়তদার দেলোয়ার হোসেন জমাদার ও জীবন গাজী জানান, জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়ৎগুলো ইলিশ শূন্য। ভরা মৌসুমে আড়তে ইলিশ না আসায় আমরা আর্থিক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। অন্যান্য বছর এসময় স্থানীয় নদী ও বরিশাল থেকে অনেক মাছ আসতো। তখন ভাত খাওয়ার সময় পেতাম না। এবার আড়তে আমরা অলস সময় পার করছি। বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রামের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং ৫শ’ থেকে ৭শ’ গ্রামের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক ধরে আড়তে একশ’ থেকে দেড়শ’ মন ইলিশ আমদানী হচ্ছে। গত বছর একই সময় দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার মন ইলিশের আমদানী ঘটেছিল। 

চাঁদপুর মৎস্য গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: আবু কাউছার দিদার বলেন, অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোতে কিছু ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পরেছে, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে  ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। এখন ভরা মৌসুম হলেও সামনে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যবসায়ী ও জেলেদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সামনে যতই দিন আসবে, ততই ইলিশের সরবরাহ বাড়বে।

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর