উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীসংলগ্ন ১১০টি চরের মানুষের মধ্যে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সময় যতো যাচ্ছে তিস্তার পানি ততই বাড়ছে। তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে হু হু করে বাড়ছে তাতে যেকোনো সময় আরো বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের যেকোনো সময় পানি প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। তিস্তার পানি আসা-যাওয়ার খেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
তিস্তা নদী এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা নদীপাড়ের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা, নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে।
চর সানিয়াজানের বাসিন্দা রবিউল বলেন, হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে তার ঘরবাড়িতে পানি উঠেছিল। একই কথা বলেন চর সিন্ধুনা এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, তার বাড়ির চারপাশেই পানি। গরু ছাগল নিয়ে চরম বেকাদায় রয়েছেন তিনি।
ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে চরের মানুষগুলো চরম বেকায়দায় দেয়া রয়েছে ।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে মঙলবার সন্ধ্যা ৭টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। আমরা সতর্ক আছি। আমরা চরের মানুষদের সতর্ক থাকতে বলেছি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল