কুমিল্লার মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহ আলম সরকারকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নে পীর কাশিমপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আকুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানও। পরিবারের দাবি, তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নন।
গ্রেফতার শাহ আলমের ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ সরকার মুন্না মঙ্গলবার বলেন, ‘এ মামলার এজাহারের ২৫ নম্বরে থাকা যে শাহ আলমের নাম রয়েছে তার বয়স ৪৫ ও বাবার নামের জায়গায় অজ্ঞাত উল্লেখ আছে। সেটা আমার বাবা না, আমার বাবার বয়স অন্তত ৮০ বছর। আমার বড় বোনের বয়স ৪০। আমার বাবা সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বয়স ও বিস্তারিত পরিচয় এলাকার সবাই জানে। কেউ তিনটা মার্ডার করার পর এলাকায় অবস্থানের কথা নয়। এটা ষড়যন্ত্র। তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার বাবা ছাড়াও গ্রামে শাহ আলম নামের ৮/১০ জন রয়েছেন।’ তিনি তার বাবার মুক্তি দাবি করেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, ‘শাহ আলম সরকার একজন উপজেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা। তিনি আকুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তাকে কেন আটক করা হয়েছে, জানি না। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ তিনি শাহ আলমের মুক্তির দাবিসহ তাকে আটকের সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান।
মামলার বাদী রিক্তা আক্তার বলেন, ‘সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম ঘটনাস্থলে ছিলেন কিনা তিনি নিশ্চিত নন। এ ঘটনায় পীর কাশিমপুরের শাহ আলম নামে একজন জড়িত বলে যখন জানতে পেরেছেন, তখন মামলায় নামটি উল্লেখ করেছেন। পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি বলে মামলাতে আসামির বাবার নাম অজ্ঞাত রেখেছেন। ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। কাউকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করতে চান না তিনি। ডিবি পুলিশের তদন্তে যদি তিনি ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে গ্রেফতার করক; না হলে তিনি চান না কোনো নিরীহ মানুষের হয়রানি হোক।’
এদিকে, ঘটনার এক মাসেও প্রধান আসামি শিমুল বিল্লাহ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় তিনি ক্ষোভ জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে শাহ আলমের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে সোমাবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলাটির মোট ১০ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। ৯ আসামি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
উল্লেখ্য, ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা-ছেলেমেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ওই গ্রামের রোকসানা বেগম রুবি (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার (২৯)। পরদিন রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ের ২৫ জনকে আসামি দিয়ে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
বিডি প্রতিদিন/এমআই