কুমিল্লার চান্দিনায় ক্রেতা ও বন্ধকদাতাদের কোটি টাকার স্বর্ণ ও গচ্ছিত টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন এক জুয়েলার্সের মালিক। গত ১০ দিন ধরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের লক্ষীপুর নতুন বাজারে।
উধাও হওয়া ব্যবসায়ী হলেন- ওই বাজারের পর্শীয়া জুয়েলার্সের মালিক নারায়ণ কর্মকার প্রদীপ।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি স্বর্ণের দাম প্রতি ভরি দুই লাখ টাকার বেশি হওয়ায় লোভ সামলাতে না পেরে তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। ভুক্তভোগীদের দাবি, তিনি সব মিলিয়ে চার কোটি টাকারও বেশি স্বর্ণ ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৈলাইন গ্রামের ছফিউল্লাহর ছেলে শরীফ বলেন, নারায়ণ কর্মকার প্রদীপ এই এলাকারই বাসিন্দা। তিনি লক্ষীপুর গ্রামের মনোরঞ্জন কর্মকারের ছেলে। প্রায় ২০ বছর ধরে এই বাজারে জুয়েলারি ব্যবসা করতেন। আমি জিম্মাদার হয়ে তাকে ৪ লাখ টাকা ঋণ তুলে দিই। আমার স্ত্রীর ২ ভরি স্বর্ণও তার কাছে গচ্ছিত ছিল। এছাড়া তিনি দৈনিক ৬০০ টাকা করে সমিতি চালাতেন। গত দুই বছরের টাকার কোনো হিসাব দেননি। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্শীয়া জুয়েলার্স দোকানটি বন্ধ, সাটার ও কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলছে। স্থানীয়রা জানান, গত ১০ দিন ধরে ব্যবসায়ী প্রদীপ গা-ঢাকা দিয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি পাশের লক্ষীপুর গ্রামে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রদীপের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমানে তার শ্বশুরবাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গোকর্ণঘাট এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পাশাপাশি কচুয়া উপজেলার তুলপাই গ্রামের ব্যবসায়ী বরুণ সাহা বলেন, মিও তার দৈনিক সমিতির সদস্য ছিলাম। প্রতিদিন ৭৫০ টাকা করে জমা দিতাম। আমার ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমরা মোট ৫১ জন সদস্য মিলে এই সমিতি চালাতাম। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে শুরু হয়ে চৈত্র মাসের শেষে টাকা ফেরত দিতেন। এবার তিনি সবার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন।
একইভাবে ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনের ৩ লাখ ৩০ হাজার, আবুল হোসেনের ৩ লাখ ৫০ হাজার, এরশাদ আলীর ৫ লাখ, বেলাল গাজীর ১ লাখ ৪২ হাজারসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বন্ধকদাতার টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন ওই জুয়েলার্স মালিক।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নারায়ণ কর্মকার প্রদীপের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল