বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের বোধোদয়

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতিও কাম্য

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারের কিছুটা হলেও বোধোদয় ঘটেছে। এ সমস্যার সমাধানে সে দেশের সরকার অতীতে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিলেও তার পরিবর্তনের আভাস লক্ষ করা যাচ্ছে। যাকে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখা যেতে পারে। এ সমস্যা নিয়ে গঠিত কফি আনান কমিশন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, তাহলেই সংকটের সমাধান অনেকটাই নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবির প্রদর্শন করে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশেই থাকবে। কফি আনান কমিশন ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে তাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের অভিযোগ করেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৮০ ভাগ রোহিঙ্গা নারী মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলেও তারা জানতে পেরেছেন। কফি আনান কমিশনের তিন সদস্যের দুজন মিয়ানমারের ও একজন লেবাননের নাগরিক। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সফর করে তারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে সে দেশের সরকার গঠিত একটি তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। তিনি কমিটিকে পুনরায় তদন্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। স্মর্তব্য, সরকার গঠিত ওই রিপোর্টে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায়নি বলে সাফাই গাওয়া হয়। বাইরের দুনিয়ার বদনাম এড়াতে মিয়ানমার সরকার কিছুটা হলেও যে যত্নবান হয়ে উঠেছে, বাস্তবতা বিবর্জিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নাকচ করে দেওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যার সম্মানজনক সমাধান চায়। বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো প্রতিবেশী দেশের সন্ত্রাসীরা যাতে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে।  মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার স্বীকার করে নিলে তা সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে তাদের সমর্থন নিশ্চিত করবে।

 নিজেদের স্বার্থেই মিয়ানমার সরকার এ ক্ষেত্রে সুবিবেচনার পরিচয় দেবে এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর