রবিবার, ৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত

উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে পদ্মা ও যমুনার চর

দেশের দুই প্রধান নদী পদ্মা ও যমুনার চরে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তাকে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করা যায়। বাংলাদেশ এমনিতেই দুনিয়ার অন্যতম ঘনবসতির দেশ। হু হু করে বাড়ছে জনসংখ্যা। বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে প্রতিদিনই হ্রাস পাচ্ছে কৃষিজমি। শিল্প স্থাপনে যুৎসই জায়গা পাওয়া সত্যিকার অর্থেই কঠিন হয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে পদ্মা ও যমুনার চরাঞ্চলকে সুষুমভাবে ব্যবহারের নানামুখী চিন্তাভাবনা শুরু হয় সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। বিমানবন্দর, পরিকল্পিত শহর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সংগতভাবেই সামনে আসে। ইতিমধ্যে দুটি চীনা কোম্পানি পদ্মা ও যমুনার চরে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিলে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দুটি কোম্পানিকে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প বাস্তবায়নের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। পদ্মা ও যমুনার ভাঙন একটি সাংবাৎসরিক বিষয়। প্রতিবছর নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় দুই পাড়ের বিপুল এলাকা। আবার নতুন চরও জেগে ওঠে নদীতে। উজান থেকে আসা পানি যে বালি বয়ে আনে তার পাশাপাশি নদী ভাঙনের প্রক্রিয়ায় পদ্মা ও যুমনায় প্রতিনিয়ত পলি পড়ছে এবং নদীর গভীরতা কমছে। পদ্মা ও যমুনার বুকে যে সব চর জেগে উঠছে তা যাতে বর্ষায় বিলীন না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতে সরকার যে একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে তারই অংশ। এই দুই নদীর চরের যে অংশে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে পার্শ্ববর্তী এলাকার নদী খনন করে তার উচ্চতা বাড়ানো হবে। নদী তীর সংরক্ষণেও নেওয়া হবে ব্যবস্থা। এর ফলে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। শুষ্ক মৌসুমেও নৌ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে। নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্ষাকালে বন্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। পদ্মা ও যমুনা তীরে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে শিল্প স্থাপনে পর্যাপ্ত জমি পাওয়া সহজতর হবে। তবে শিল্পায়ন যাতে নদী দূষণে ভূমিকা না রাখে সে ব্যাপারেও থাকতে হবে সতর্ক। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর