বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা গণহত্যা

বর্মি জেনারেলদের বিচার হওয়া উচিত

রোহিঙ্গা নিপীড়নের তদন্তে জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে, তত দিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে শান্তি ফিরে আসবে না। দীর্ঘ ১৫ মাসের তদন্ত শেষে তিন সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ৪৪০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে রাখাইনসহ মিয়ানমারের তিনটি রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ভয়ঙ্কর সব বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা। এর মধ্যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করে অপসারণ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এ মিশনের নেতৃত্ব দেন ইন্দোনেশিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান। সদস্য ছিলেন শ্রীলঙ্কার আইনজীবী নারী অধিকার বিশেষজ্ঞ রাধিকা কুমারস্বামী ও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক মানবাধিকার কমিশনার এবং দেশটির আইন সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি। স্মর্তব্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনীর বেশকিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ হামলার অজুহাতে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। একই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গার ঢল। শরণার্থীদের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ। সারা দুনিয়ায় এটিকে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবেই দেখা হচ্ছে। একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম জঘন্য হত্যাকা- সংঘটিত করার পরও বিশ্বজনমতকে তোয়াক্কা না করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনীর জেনারেলদের পেছনে প্রতিবেশী চীনের মদদ থাকায়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বর্মি বর্গীদের প্রতি চীনের নগ্ন সমর্থনের কারণে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে চীনসহ মদদদানকারী দেশগুলোকেও মানবতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর