রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জাতিসংঘের প্রস্তাব

মিয়ানমারের সুমতি হোক

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ের ভোটাভুটিতে ১৪২টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় এবং মাত্র ১০টি দেশ বিরোধিতা করে। ২৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। স্মর্তব্য, গত বছরও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি প্রস্তাব পাস হয়। ওই প্রস্তাবটিও ৯৭টি দেশ কো-স্পন্সর করেছিল। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাখাইনে মুসলিমরা মিয়ানমারের স্বাধীনতার আগেই প্রজম্ম  থেকে প্রজম্ম  বসবাস করছে। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়ে মিয়ানমার সরকারকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর যারা অত্যাচার করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাসকৃত প্রস্তাবে মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তের জন্য দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার ওপরে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের মিলিটারির ওপরে যেন বেসামরিক সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। রাখাইনে সামরিক অভিযানের কারণে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে এবং প্রস্তাবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে এ অভিযান বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। এজন্য যারা দোষী তাদের বিচারের আওতায় আনারও আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবে রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন, নাগরিকত্ব প্রদান, কফি আনান কমিশন রিপোর্টের পূর্ণ বাস্তবায়ন, রোহিঙ্গাদের নিজঘরে প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মধ্যে অস্থিতিশীল ও নিরাপত্তাহীনতা পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে উত্থাপিত প্রস্তাবে ৯৯টি দেশ স্পন্সর করে। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে গোটা বিশ্বই যে সহানুভূতিশীল তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মনোভাবে স্পষ্ট হয়েছে। জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাব মিয়ানমার ও তার মিত্ররা এযাবৎ যেভাবে অগ্রাহ্য করে চলেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। নতুন প্রস্তাবটি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় ঘটাবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর