বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্ঘটনা নয় হত্যাকাণ্ড

মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হওয়া কাম্য নয়

ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আবারও উত্তাল হয়েছে রাজপথ। উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগানে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে গত দুই দিন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে নগর জীবনের একাংশ। দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। তার পরও সাধারণ মানুষের একাত্মতা ছাত্রদের সঙ্গে। সড়ক দুর্ঘটনার নামে একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপর সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বিইউপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহের তৃতীয় দিনে ঘটেছে বেপরোয়া বাসচালকের দ্বারা ছাত্র হত্যার ঘটনা। এ খবরে ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তার সহপাঠীরা। শতাধিক শিক্ষার্থীর আন্দোলনে একে একে সংহতি জানাতে আসেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ ও শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঘাতক বাসটি আবরারকে ধাক্কা দেওয়ার আগে বারিধারা নতুনবাজারে দাঁড়িয়ে থাকা মিরপুর আইডিয়াল স্কুলের ছাত্রী সিনথিয়া সুলতানাকে ধাক্কা দেয়। এতে সিনথিয়ার ঘাড়ের হাড় ভেঙে যায়। পথচারীরা ধাওয়া দিলে বাসটি বেপরোয়া গতিতে পালানোর সময় যমুনা ফিউচার পার্কে আরও বিপর্যয়কর ঘটনা ঘটায়। আহত স্কুলছাত্রী সিনথিয়াকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আট মাস আগে বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজধানী। ঘাতক বাস-ট্রাক চালকদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিল প্রকারান্তরে দেশবাসী। শিক্ষার্থীরা সে সময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে নয় দফা দাবি তুলেছিলেন। সেসবের মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংসদে পাস এবং বাচালতার জন্য সমালোচিত তৎকালীন এক মন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোনো দাবিই পূরণ হয়নি। নিয়ম মেনে জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপারের সময় ঘাতক বাস আবরারের ওপর হামলে পড়ে। অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বাবার সামনেই প্রাণ হারাতে হয় তাকে। আবরারের জীবনহানিতে প্রমাণিত হয়েছে, সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সময় ক্ষেপণ মৃত্যুর মিছিলকেই দীর্ঘায়িত করবে। তা সরকার বা পরিবহনসংশ্লিষ্ট কারওই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর