মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি

দুর্যোগ মোকাবিলায় চাই টেকসই কৌশল

ঘূর্ণিঝড় ফণীর ছোবলে ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারে নেওয়া হচ্ছে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ। হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারেও জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত ২২ হাজার একর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর অনুষঙ্গ হয়ে জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানায় উপকূলভাগের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ বাঁধ ভাঙার মতো ছিল কিনা সংশয় রয়েছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণে শুভঙ্করের ফাঁকি না থাকলে বিপর্যয়ের অনেকখানিই এড়ানো যেত। আমরা আশা করব, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পেছনে নির্মাণকাজের ফাঁকি দায়ী কিনা খতিয়ে দেখা হবে। স্মর্তব্য, গত শনিবার ভোরে খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট উপকূল হয়ে দুর্বল হয়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর আগে শুক্রবার প্রচ- এই ঘূর্ণিঝড় ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে আঘাত হানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ঘর বিধ্বস্ত হয়ে, গাছ চাপা পড়ে, বজ্রপাতে ও পানিতে ডুবে বাংলাদেশে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বগী এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ তছনছ হয়ে গেছে। পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০টি গ্রাম তলিয়ে আছে। ফণীর প্রভাবে কচা, পানগুছি নদী ও বলেশ্বর নাদের পানি ৩ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। সরকারি হিসাবে, ফণীর কারণে সারা দেশে ২২ হাজার ৩৪৫ একর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৫৯টি ঘর। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ২৩৮টি বসতঘর। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকরা এসব প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ পাঠিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে। ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতে প্রবল বেগে আঘাত হানলেও প্রাণহানির দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে। জনসচেতনতার অভাবেই এটি ঘটেছে। আমরা আশা করব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে ফাঁকফোকর রয়েছে তা বন্ধে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গড়ে তোলা হবে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার টেকসই কৌশল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর