বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

অর্থনীতির দুই বিপদ

অর্থ পাচার ও ঋণ খেলাপ বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে

বিদেশে টাকা পাচার ও ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়ায় দেশের ব্যাংকগুলোয় তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। সৎ ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদেরও তারা ঋণ দিতে পারছে না অর্থাভাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের আর্থিক শৃঙ্খলার বড় সংকট অর্থ পাচার। কোথায় কোন দেশে এ টাকা আছে তা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের কর্তাব্যক্তিদের অজানা নয়। পাচার রোধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন আছে। এসব আইন ব্যবহার করে সরকার পাচার করা অর্থ বাজেয়াপ্ত করতে পারে। সংশ্লিষ্ট দেশ এবং ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে টাকা ফেরত আনা যায় সে উদ্যোগ নেওয়া উচিত হলেও সেদিকে দৃশ্যত কারোর গরজ নেই। যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে সেগুলো যেমন আটকানো দরকার, তেমন যারা পাচারের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃশ্যমান শাস্তি দিতে হবে। ঋণখেলাপিদের প্রচলিত আইনের আওতায় জেলা-জরিমানা করা যায়। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও খেলাপি নামের চোর-মহাচোরদের বিরুদ্ধে বাস্তবে কিছু করা হয়নি। এদের দৃশ্যমান শাস্তি দিলে সব খেলাপির কাছে কড়া বার্তা  পৌঁছে যাবে। রাষ্ট্রীয় অর্থ লুণ্ঠনকারীদের কঠোর বিচার না হলে ব্যাংকিং খাতের উন্নতি হবে না। শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রচলিত যে আইন আছে, প্রয়োজনে তা সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে ফেরত দেওয়া হবে না, তা মেনে নেওয়া যায় না। অর্থ পাচার ঠেকাতে হলে পাচারের পথ বন্ধ করা খুবই জরুরি। দেশে এ মুহূর্তে সরকারের সামনে কোনো রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নেই। রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকেও দেশ প্রায় সর্বাংশে মুক্ত। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিঃসন্দেহে এটি এক সুসময়। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি তার সুফল নিতে পারছে না। দেশে ডুয়িং বিজনেস উন্নত হচ্ছে না। জেঁকে বসা আমলাতান্ত্রিকতা অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশ খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচারের যে দুই মহাসমস্যায় ভুগছে তার ইতি ঘটাতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ঋণখেলাপিরা ব্যাংকের টাকা লোপাট করে পার পাবে না। পাচারকারীদের নখর ছেঁটে ফেলাও সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর