সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক চাঁদাবাজি

কেটে যাক সততার সংকট

চাঁদাবাজ নামের নোংরা শকুনদের কাছে জিম্মি দেশের লাখ লাখ মানুষ। যখন যারা ক্ষমতায় থাকে সে দল ও অঙ্গসংগঠনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চাঁদাবাজির বিষয়টি একটি ওপেন সিক্রেট। আমাদের দেশে সরকারকে কর না দিয়ে রেহাই পাওয়া গেলেও মাস্তান নামধারী নর্দমার কীটদের চাঁদাবাজির হাত থেকে রেহাই পাওয়া সত্যিকার অর্থেই অসম্ভব। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পাঁচ শতাধিক সিন্ডিকেটের কয়েক হাজার অপরাধী। তাদের ইন্ধনদাতা হিসেবে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু নৈতিকতা বিবর্জিত নেতা। নানা সিন্ডিকেটে বিভক্ত চাঁদাবাজরা নিজেদের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড। ফলে স্থানীয় প্রশাসন তাদের চাঁদাবাজি রোধের ঝক্কিঝামেলায় পা বাড়ায় না। অনেক ক্ষেত্রে থানা পুলিশের সহায়তা নিয়েই চলে বাধাহীন চাঁদাবাজি। পরিবহন সেক্টরে যেন চাঁদাবাজির শেষ নেই। থানার চাঁদা, ফাঁড়ির চাঁদা, ঘাট চাঁদা, স্পট চাঁদা, ক্লাব খরচা, নিরাপত্তা ফি, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড, মাস্তান ভাতা, নেতার সম্মানী ইত্যাদি নানা নামে বছরজুড়ে চলে চাঁদার উৎসব। রাজধানীর ফুটপাথেই কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে। গুলিস্তান, পল্টন, বায়তুল মোকাররম, মৌচাক-মালিবাগ, শান্তিনগরসহ আশপাশের ফুটপাথে প্রতিদিন চলে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি। শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশ চাঁদাবাজ নামের নোংরা শকুনদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়হীন ভূমিকার কারণে। চাঁদাবাজদের সঙ্গে রাজনৈতিক টাউটদের যোগসূত্র তাদের দৌরাত্ম্যকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে। সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে বড় চাঁদাবাজরা গ্রেফতার কিংবা গা-ঢাকা দিলেও তৃণমূলের চাঁদাবাজরা এখনো সক্রিয়। পরিবহন চাঁদাবাজির কারণে ভোক্তাদের গড়ে ১৫ শতাংশ বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়। চাঁদাবাজি দমনে এসব নোংরা জীবদের রাজনৈতিক কানেকশনের অবসান ঘটাতে হবে। তাদের পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসৎ সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ।  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সততার সংকট থেকে বের করে আনতে পারলে চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী  কর্মকান্ডের ইতি ঘটানো সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর